নামাজের জন্য ১০ টি সূরা । সূরা ফালাক । সূরা নাস। সূরা ইখলাস
প্রিয় পাঠক নামাজের জন্য আমরা বিভিন্ন সূরা এবং আয়াত মুখস্ত করে থাকি। আমরা
বিশেষ করে ১০ টি ছোট সূরা নামাজের জন্য মুখস্ত করে থাকি। আজকে আমরা আপনাদের সামনে
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা এবং কুরআনের শেষ ১০ টি সূরা নিয়ে আলোচনা করব।
আমাদের আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি নামাজের জন্য ১০ টি সূরা অর্থাৎ
সূরা ফাতিহা , সূরা নাস , সূরা ফালাক , সূরা ইখলাস , সূরা ফীল , সূরা লাহাব ,
সূরা নাসর , সূরা কাফিরুন , সূরা মাউন , সুরা কাউসার , সূরা কুরাইশ এবং সূরা কদর
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা । সূরা ফালাক । সূরা নাস। সূরা ইখলাস
চলুন প্রিয় পাঠক প্রথমেই আমরা ১০টি ছোট সূরা বা কুরআনের শেষ ১০টি সূরার তালিকা
জেনে নেই:
- সূরা নাস
- সূরা ফালাক
- সূরা ইখলাস
- সূরা লাহাব
- সূরা নাসর
- সূরা কাফিরুন
- সূরা কাউসার
- সূরা মাউন
- সূরা কুরাইশ
- সূরা ফীল
সূরা ফাতিহা
সূরা ফাতিহা পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা, এই সূরাটি মক্কায়
অবতীর্ণ মোট আয়াত সংখ্যা ০৭টি রুকু সংখ্যা ০১ টি।সূরা ফাতিহা সম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে পড়ুনঃ
সূরা ফাতিহা বিস্তারিত।
সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
- আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন
- আর রহমানির রহীম।
- মালিকি ইয়াওমিদ্দীন।
- ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন ।
- ইহদিনাস্ সিরাতাল মুস্তাক্বীম সিরাতল্লাযীনা আন’আমতা আলাইহিম।
- গইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ---দল্লীন । আমীন
সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থ
জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। পরম দয়াময়, বিচার দিবসের মালিক । আমরা তোমার ইবাদত করি এবং
তোমারই কাছে সাহায্য চাই । আমাদেরকে সরল পথ দেখাও যে পথে করুণা বর্ষণ করেছ এবং ঐ
পথে নয় যাদের প্রতি তুমি রুষ্ট এবং ক্রোধান্বিত। (হে আল্লাহ! কবুল করো।)
সূরা নাস
সূরা নাস মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৬ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১ টি।
এটি পবিত্র কুরআন শরীফের সর্বশেষ অর্থাৎ ১১৪ তম সূরা।
সূরা নাস বাংলা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- কুল আউযু বিরব্বিন্ নাস।
- মালিকিন্ নাস।
- ইলাহিন্ নাস।
- মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস
- আল্লাযী ইউওয়াসবিসু ফী সুদূরিন নাস।
- মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস ।
অর্থ : বল আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের রব , মানুষের বাদশা , মানুষের প্রকৃত
মাবুদের কাছে , এমন প্ররোচনা দানকারীর অনিষ্ঠ থেকে যে বারবার ফিরে আসে, যে
মানুষের মনে প্ররোচনা দান করে, সে জ্বীনদের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্যে থেকে।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা : সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ ছবি
সূরা ফালাক
সূরা ফালাক মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৫ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১১৩ তম সূরা।
সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- কুল আ'উযূ বিরব্বিল ফালাক্ব ।
- মিন শাররি মা খলাক ।
- ওয়া মিন শাররি গসিকিন ইযা ওয়াক্বাব ।
- ওয়া মিন শাররিন্ নাফফা-সাতি ফিল উক্বাদ।
- ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ।
অর্থ : বলো, আমি আশ্রয় চাচ্ছি প্রভাতের রবের, আমি সৃষ্টি পদার্থের অপকারিতা হতে,
অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত্রির অপকারিতা হতে, গিরাসমূহে ফুক দানকারিগণের অপকার হতে এবং
হিংসুকের অপকার হতে যখন সে হিংসা করে।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা : সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণ ছবি
সূরা নাস ও সূরা ফালাকের শানে নুযূল
আসম ইবনে লবীদ ইয়ামদী মহানবী (সা.)-এর মাথার চুল নিয়ে চিরুনির এগারোটি দাঁতের সাথে এগারোটি গিরা বেঁধে কোনো এক
কূপের নিচে পাথরের তলায় যাদু করে দিয়েছিল। সেই যাদুর প্রভাবে মহানবী (সা.)
দিন দিন শীর্ণকায় হয়ে যেতে লাগলো।
অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা হুযূর (সা.)-কে উক্ত যাদুর কথা জানিয়ে দিলেন এবং সঙ্গে
সঙ্গে নির্দেশ করলেন যেন উক্ত কূপের তলা হতে যাদুকৃত চুলের গিরাগুলো উত্তোলন
করে সূরায়ে নাস ও সূরায়ে ফালাকের এগারোটি আয়াত পাঠ করে তাতে দম করেন।
মহানবী (সা.)-এর নির্দেশক্রমে হযরত আলী (রা.) যাদুকৃত চুলের গোছা উঠিয়ে আনলেন এবং উক্ত সূরাদ্বয়ের এক একটি আয়াত পাঠ করে
এক একটি গিরায় দম করতে লাগলেন। সঙ্গে সঙ্গে গিরাগুলো খুলে গেল এবং মহানবী
(সা.) পুনঃ সুস্থ হয়ে উঠলেন। এ জন্য উক্ত সুরাদ্বয়কে মু'আব্বিযাতাইন' বলা
হয়ে থাকে।
সূরা ইখলাস
সূরা ইখলাস মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৪ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১১২ তম সূরা।
সূরা ইখলাসের শানে নুযূল
একদা একদল কাফির মহানবী (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলতে লাগল, “হে মুহাম্মদ!
আপনার আল্লাহর কিছু গুণ, পানাহার ও উত্তরাধিকারী সম্বন্ধে কিছু পরিচয় পেশ করুন
এবং তাঁর সৃষ্টি রহস্যও আমাদের নিকট খুলে বলুন।” তাদের এ ধৃষ্টতামূলক বাক্যের
প্রত্যুত্তরে আল্লাহ্ তা'আলা এ সূরা অবতীর্ণ করেন।
সূরা ইখলাস বাংলা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- কুল হু ওল্লাহু আহাদ।
- আল্লাহুস্ সামাদ।
- লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ।
- ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ ।
অর্থ : হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, আল্লাহ এক, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। । তিনি কারো
জনক নন এবং তিনি কারো হতে জন্মলাভ করেননি এবং তাঁর সমকক্ষ আর কেউ নেই ।
সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা : সূরা লাহাব
সূরা লাহাব মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৫ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১১১ তম সূরা।
সূরা লাহাবের শানে নুযূল
আবূ লাহাব মহানবী (সা.)-এর চাচা ছিল। সে হুযূর (সা.)-এর প্রতি কঠোর বিদ্বেষ পোষণ
করতো ও তার স্ত্রী উম্মে জামীলাও ছিল কট্টর কাফির। সে রাসূলে পাক (সা.)-এর
রাস্তায় কাঁটা বিছিয়ে রাখতো, ফলে চলার সময় হুযূর (সা.) অনেক কষ্ট পেতেন।
আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোবাইল নাম্বার । রাজশাহী টু খুলনা ট্রেনের সময়সূচী । রেডমি মোবাইল প্রাইস - 2024
একদা দীনের নবী (সা.) স্বীয় প্রতিবেশীদের নিকট পবিত্র ইসলামের দাওয়াত পেশ
করছিলেন, এমন সময় আবূ লাহাব বিশ্বনবী (সা.)-এর প্রতি প্রস্তর নিক্ষেপ করতে উদ্যত
হলে আল্লাহ তা'আলা এ সূরা নাজেল করলেন, সঙ্গে সঙ্গে আবূ লাহাবের দুই হাত অবশ হয়ে
গেল ।
সূরা লাহাব বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাবিউ ওয়া তাব্।
- মা আগনা আনহু মালুহু ওয়া মা কাসাব ।
- সাইয়াসলা নারান যাতা লাহাবিউ ওআমরা আতুহূ হাম্মালাতাল হাতব ।
- ফী জীদিহা হাবলুম মিম মাসাদ।
অর্থ : আবূ লাহাবের হস্তদ্বয় বিনষ্ট হয়েছে এবং সে নিজেও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
তার উপার্জিত ধন-সম্পত্তি কোনো কাজে আসেনি। সে সত্বরই শিখা বিশিষ্ট আগুনে তার
কাঠবহনকারিণী স্ত্রীসহ দগ্ধিভূত হবে। তার (স্ত্রীর) গলদেশে খেজুরের আঁশের রশি
থাকবে।
সূরা নাসর
সূরা নাসর মদীনায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৩ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১ টি।
এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১১০ তম সূরা।
সূরা নাসরের শানে নুযূল
মক্কা বিজয়ের পূর্বে মহানবী (সা.) অধীর আগ্রহে মক্কা বিজয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ
করছিলেন। আল্লাহ তা'আলার ওহীর জন্য তিনি কায়মনে প্রার্থনা করছিলেন। অতঃপর এ সূরা
অবতীর্ণ হলো। মহানবী (সা.) এ সূরা তেলাওয়াত করলে তাঁর চাচা হযরত আব্বাস (রা.)
কেঁদে ফেললেন। মহানবী (সা.) ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন, উত্তরে হযরত আব্বাস
(রা.) বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ সূরার মধ্যে আমি আপনার মৃত্যু সংবাদের নির্দেশ
অনুভব করছি।
সূরা নাসর বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- ইযা জা-আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাত্।
- ওয়া র’আইতান্নাসা ইয়াদখুলূনা ফী দীনিল্লাহি আফওয়াজা ।
- ফাসাব্বিহ বিহামদি রব্বিকা ওয়াস্তাগফিরহু ইন্নাহূ কানা তাওয়্যাবা ।
অর্থ : যখন আল্লাহর অনুগ্রহ ও বিজয় আসবে (তখন) ইসলাম ধর্মে দলে দলে লোকদেরকে
প্রবেশ করতে দেখবে। অতএব তুমি আপন প্রতিপালকের প্রশংসা- কীর্তন করো ও তাঁর নিকট
ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রার্থনা গ্রহণকারী।
সূরা কাফিরুন
সূরা কাফিরুন মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৬ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১০৯ তম সূরা।
সূরা কাফিরুনের শানে নুযূল
একদা একদল মুশরিক কাফির মহানবী (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলল, “হে মুহাম্মদ
(সা.)! আপনি যদি এ বছর আমাদের প্রতিমার অর্চনা করেন, তাহলে পরবর্তী বছর আমরা
আপনার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্র উপাসনা করব।” তাদের এরূপ জঘন্য উক্তির প্রতিবাদে
আল্লাহ্ তা'আলা সূরা কাফিরুন অবতীর্ণ করেন ।
সূরা কাফিরুন বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন।
- লা আ’বুদু মা তাবুদূন।
- ওয়া লা আনতুম আবিদূনা মা আবুদ।
- ওয়ালা আনা আবিদুম মা আবাদতুম।
- ওয়া লা আনতুম আবিদূনা মা আবুদ ।
- লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়াদীন
অর্থ : হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, ওহে কাফিরগণ! আমি তার উপাসনা করি না তোমরা যার
উপাসনা করছ এবং তোমরা তার উপাসক নও আমি যার উপাসনা করছি এবং আমি তার উপাসক নই
তোমরা যার উপাসনা করছ । তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম এবং আমার জন্য আমার ধর্ম।
আরো পড়ুন: উকিল/অ্যাডভোকেট/ব্যারিস্টার হতে কি করবেন ? । হ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম । বাংলাদেশের ৬৬ তম জেলার নাম কি ?
সূরা কাওসার
সূরা কাওসার মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৩ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১০৮ তম সূরা।
সূরা কাওসারের শানে নুযূল
মহানবী (সা.)-এর পুত্র কাসেম (রা.) ইন্তেকাল করলে কাফির আস ইবনে ওয়ায়েল এই বলে
উপহাস করতে লাগল যে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিঃসন্তান । এর প্রত্যুত্তরে আল্লাহ্
তাআলা এ সূরা নাজিল করে নবী (সা.)-এর শত্রুদেরকে চিরতরে অসন্তুষ্ট করে
দিলেন।
সূরা কাওসার বাংলা অর্থসহ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- ইন্না আতাইনা কাল কাওসার।
- ফাসাল্লি লিরাব্বিকা ওয়ানহার ।
- ইন্না শানিআকা হুয়াল আবতার ৷
অর্থ : নিশ্চয়ই তোমাকে বেহেশতের কাওসার নামক প্রস্রবণ দান করেছি। অতএব তুমি
তোমার প্রভুর
ইবাদত
করো ও কুরবানি করো। নিশ্চয়ই তোমার শত্রুরা নিঃসন্তান।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা : সূরা মাউন
সূরা মাউন মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৭ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১ টি।
এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১০৭ তম সূরা।
সূরা মাউনের শানে নুযূল
কাফির আবূ জাহলের তত্ত্বাবধানে একজন এতিম প্রতিপালিত হচ্ছিল। কিন্তু আবূ জাহল
উক্ত এতিমের সম্পত্তি কুক্ষিগত করবার জন্য তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। আর একদা আবূ
সুফিয়ান একটি উট জবাই করলে একজন এতিম এসে তার নিকট সামান্য গোস্ত প্রার্থনা করল।
আবূ সুফিয়ান ক্রোধভরে সেই এতিমের মাথায় লাঠির দ্বারা আঘাত করলে আল্লাহ্ তাআলা
আবূ জাহল ও আবূ সুফিয়ানের এ জঘন্য কাজের প্রতিবাদে এ সূরা নাজিল করেন।
সূরা মাউন বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- আর আইতাল্লাযী ইউকাযযিবু বিদ্দীন ।
- ফাযালিকাল্লাযী ইয়াদুয়্যুল ইয়াতীম ।
- ওয়ালা-ইয়াহুদ্দ আলা ত্বোআমিল মিসকীন ।
- ফাওয়াইলুল্লিল মুসাল্লীন।
- আল্লাযীনা হুম আন সলাতিহিম সাহুন ।
- আল্লাযীনা হুম ইউ র’উন।
- ওয়া ইয়ামনা উনাল মাউন ।
অর্থ : তুমি কি তাকে দেখেছ? যে ব্যক্তি শেষ দিনের পাপ-পুণ্যের সুবিচার ও
প্রতিফলকে মিথ্যা বলছে? ফলত সে ঐ ব্যক্তি যে পিতা-মাতাহীন বালকের সাথে প্রতারণা
করছে এবং অনাথ ব্যক্তিকে খাদ্যদানে প্রবৃত্ত হয় না। আক্ষেপ যারা নামাজে
অমনোযোগী। যারা লোক দেখানো সৎকাজ করে থাকে এবং প্রতিবেশীদেরকে ছোট-খাট সাহায্য
বস্তু দেওয়া থেকে বিরত থাকে ।
সূরা কুরাইশ
সূরা কুরাইশ মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৪ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১
টি। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১০৭ তম সূরা।
সূরা কুরাইশের শানে নুযূল
মক্কার কুরাইশগণ শীতকালে ইয়ামন প্রদেশে এবং গ্রীষ্মকালে বাণিজ্য উপলক্ষে শাম
দেশে গমনাগমন করতো। ব্যবসা-বাণিজ্যে তাদের আর্থিক উন্নতি সাধিত হলেও তারা আল্লাহর
ওপর ঈমান আনতে ইতস্ত করছিল। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা এ সূরা অবতীর্ণ করলেন এবং সাথে
সাথে নিশ্চয়তা দান করলেন যে, তারা এক আল্লাহর ইবাদত করলে তাদের রুজি-রোজগারের
কোনো চিন্তা করতে হবে না।
সূরা কুরাইশ বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- লিঈলাফি কুরাঈশ।
- ঈলাফিহিম রিহলাতাশ্ শিতাই ওয়াসাঈফ।
- ফালইয়াবুদূ রাব্বা হাযাল বাইত
- আল্লাযী আত্ব আমাহুম মিন জুয়িউ ওয়া আমানহুম মিন খাউফ।
অর্থ : কুরাইশগণের
পর্যটনের
জন্য শীত ও গ্রীষ্মকালে বিদেশ যাত্রার আসক্তি তাদের প্রবল ছিল। অতএব এই পবিত্র
ঘরের প্রতিপালকের ইবাদাত করা কর্তব্য যিনি তাদেরকে ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য অন্ন
দিয়েছেন এবং তাদেরকে ভয় হতে রক্ষা করেছেন।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা : সূরা ফীল
সূরা ফীল মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৫ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১ টি।
এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ১০৬ তম সূরা।
সূরা ফীলের শানে নুযূল
ইয়ামানের কাফির বাদশাহ আবরাহা সানআ নামক স্থানে একটি মন্দির নির্মাণ করেছিল। এতে
তার উদ্দেশ্য এই ছিল যে, মানুষ যেন কাবা শরীফের হজ তথা তাওয়াফ ও জেয়ারত না করে
উক্ত মন্দিরের হজ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে খানায়ে কাবার অনুরক্ত বনূ কেনানের
কতিপয় লোক উক্ত মন্দিরে পেশাব-পায়খানা করে দুর্গন্ধময় করে দেয়।
আরো পড়ুনঃসাইবার অপরাধ প্রতিরোধের নিয়ম । সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম । কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয়
ফলে আবরাহা ক্রোধান্বিত হয়ে বিরাট সৈন্যবাহিনী ও হস্তীদলসহ কাবা শরীফ ধ্বংস করার
জন্য মক্কা শরীফ আক্রমণ করল । কিন্তু আল্লাহ তাআলার পাঠানো আবাবীল পাখির কঙ্কর
নিক্ষেপের ফলে আবরাহা সসৈন্যে ধ্বংস হয়ে গেল । উক্ত ঘটনাকে মহানবী (সা.)-এর
স্মরণে উদিত করার জন্যই এ সূরা নাজেল করেন ।
সূরা ফীল বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- আলামতারা কাইফা ফাআলা রব্বুকা বিআসহাবিল ফীল ।
- আলাম ইয়াজআল কাইদাহুম ফী তাদ্বলীল।
- ওয়া আরসালা আলাইহিম ত্বাইরান আবাবীল ।
- তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন সিজ্জীল ।
- ফাজা আলাহুম কা‘আসফিম মা’’কূল ।
অর্থ : তুমি কি দেখনি, হস্তী পালকের সাথে তোমার প্রতিপালক কিরূপ ব্যবহার
করেছিলেন? আল্লাহ্ কি তাদের চক্রান্তকে ব্যর্থ করেননি? আল্লাহ্ তাদের ওপর ঝাঁকে
ঝাঁকে আবাবীল পাখি প্রেরণ করেছিলেন। সে সকল পাখি তাদের ওপর প্রস্তর খণ্ড নিক্ষেপ
করেছিলেন। তাদেরকে তিনি ভক্ষিত তৃণ পত্রের ন্যায় করে দিয়েছেন ।
আরো পড়ুনঃ রাগের মাথায় তালাক দিলে কি হয় ? । নামাজের সময়সূচী-২০২৪ । সন্তানদের সুন্দর নাম রাখার পদ্ধতি
সূরা কদর
সূরা কদর মক্কায় নাযিল হয় , এর মোট আয়াত সংখ্যা ০৫ টি এবং রুকু সংখ্যা ০১ টি।
এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ৯৭ তম সূরা।
সূরা কদরের শানে নুযূল
একদা মহানবী (সা.) বক্তৃতা দেবার সময় সাহাবীদেরকে বললেন যে, বনী ইসরাঈলের একজন
আবেদ মুমিন বান্দা এক হাজার বছর আল্লাহর ইবাদাত করেছেন। এরূপ শ্রবণ করে কতিপয়
সাহাবী আরজ করলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উম্মতগণ এত দীর্ঘ হায়াত পায় না । এ
জন্য তাদের পক্ষে উক্ত আবেদের সমকক্ষ হওয়া কিছুতেই সম্ভব না।” সাহাবীগণের কথার
উত্তর স্বরূপ আল্লাহ্ তাআলা এ সূরা অবতীর্ণ করেন ।
সূরা কদর বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
- ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল ক্বাদর।
- ওয়া মা আদরাকা মা লাইলাতুল ক্বাদর ।
- লাইলাতুল ক্বাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহর ।
- তানাযযালুল মালাইকাতু ওয়ার রূহ ফীহা বিইযনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমরিন সালাম ।
- হিয়া হাত্তা মাতলা ইল ফাজর ।
অর্থ : নিশ্চয়ই আমি তা (কুরআন মাজীদ) সম্মানিত রাত্রিতে নাজিল করেছি। তুমি কি
জানো সম্মানিত রাত্রি কি? সেই সম্মানিত রাত্রি হাজার মাস হতেও উত্তম। উক্ত
রাত্রিতে ফেরেশতাগণ ও আত্মাসমূহ স্বীয় রবের আদেশে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয় এবং
সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত তারা অবস্থান করতে থাকে। সেই রাত পুরোপুরি শান্তিময়
ফজরের আগ পর্যন্ত।
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা । সূরা ফালাক । সূরা নাস। সূরা ইখলাস : লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আমরা আপনাদের সামনে নামাজের জন্য ১০ টি সূরা অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ,
সূরা নাস , সূরা ফালাক , সূরা ইখলাস , সূরা ফীল , সূরা লাহাব , সূরা নাসর , সূরা
কাফিরুন , সূরা মাউন , সুরা কাউসার , সূরা কুরাইশ এবং সূরা কদর সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করলাম।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করুন এবং গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।