তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত । ইশরাকের নামাজ । ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময়
প্রিয় পাঠক তাহাজ্জুদ নামাজ , ইশরাকের নামাজ চাশতের নামাজ আমরা বিভিন্ন সময়
পড়ে থাকি।তাই আমরা অনেকেই তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত , ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ,
ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময় , যাওয়ালের নামাজ সম্পর্কে জানতে চাই ।
আজকে আমরা আপনাদের সামনে তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত , তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
, ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম , চাশতের নামাজের নিয়ত , ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময়
, যাওয়ালের নামাজ , ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই শেষ পর্যন্ত
আমাদের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত । ইশরাকের নামাজ । ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময় । যাওয়ালের নামাজ
তাহাজ্জুদ নামাজ
পবিত্র কুরআনে
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
ইরশাদ করেছেন- ওয়া মিনাল্লাইলি ফাতাহাজ্জাদ বিহী নাফিলাতাল্লাকা ‘আসা আই ইয়াব
আছাকা রাব্বুকা মাক্কামাম মাহমূদা ।
অর্থ : (হে নবী!) রাতের কিছু অংশ থাকতে ওঠে আপনি তাহাজ্জুদ
নামাজ আদায়
করুন। অসম্ভব নয় যে, এর পরিবর্তে আপনার প্রভু কিয়ামতের দিন আপনাকে মাকামে
মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দেবেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিইয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই সালাতিত তাহাজ্জুদি সুন্নাতি
রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার ।
অর্থ : আমি আল্লাহ তা'আলার জন্য কেবলামুখি হয়ে তাহাজ্জুদের দু'রাকাত সুন্নত
নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
সমস্ত নফল নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত অনেক বেশি। তাহাজ্জুদ নামাজের
ওয়াক্ত
দ্বিপ্রহর রাত্রির পর হতে সুবহে কাযিবের পূর্ব পর্যন্ত এটা সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা। তাহাজ্জুদের
নামাজ বারো রাকাত। তবে শক্তি অনুযায়ী চার রাকআত বা আট রাকআত পড়লেও আদায় হয়ে
যাবে।
আরো পড়ুনঃ ওয়ালটন এসি প্রাইস ইন বাংলাদেশ । আইপিএস ও আইপিএস ব্যটারির দাম ।ছেলেদের আধুনিক ইসলামিক নাম । ভেরিকোসিল হলে কি বাচ্চা হয় না
যেহেতু হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে,
মহানবী (সা.)
কোনো সময় চার রাকআত বা কোনো সময় আট রাকআত আবার কোনো সময় বারো রাকআত নামাজ
আদায় করতেন । দুই রাকআত করে ছয় সালামে এ নামাজ আদায় করতে হয়। এ নামাজ আদায়
করলে খুব বেশি ছওয়াব পাওয়া যায় ; কিন্তু আদায় না করলে কোনো গুনাহ নেই। এ
নামাজের সমস্ত কিছু অন্যান্য নফল নামাজের মতো ।
তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত
তাহাজ্জুদের নামাজ এর নির্দিষ্ট কোন রাকাত নেই আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী বা
শারীরিক সামর্থ্য অনুযায়ী ৪,৮,১২ বা তারও বেশি করতে পারেন। অধিকাংশ রেওয়াতে
পাওয়া যায় তাহাজ্জুদের
নামাজ বারো রাকাত।
আরো পড়ুন: উকিল/অ্যাডভোকেট/ব্যারিস্টার হতে কি করবেন ? । হ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম । বাংলাদেশের ৬৬ তম জেলার নাম কি ?
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম
মহানবী (সা.) কোনো সময় চার রাকাত বা কোনো সময় আট রাকাত আবার কোনো সময় বারো
রাকাত নামাজ আদায় করতেন । দুই রাকআত করে ছয় সালামে এ নামাজ আদায় করতে হয়। এ
নামাজের সমস্ত কিছু অন্যান্য নফল নামাজের মতো ।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে কয়েকবার দরুদ শরীফ পাঠ করবে, অতঃপর
বিতরের নামাজ আদায় করবে। তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করে
ফজরের
পূর্ব পর্যন্ত জিকির-আযকার,
কালিমা,
দোয়া-দরুদ প্রভৃতি পাঠ করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায় ।
আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোবাইল নাম্বার । রাজশাহী টু খুলনা ট্রেনের সময়সূচী । রেডমি মোবাইল প্রাইস - 2024
যারা সাংসারিক কাজকর্মে ব্যস্ত থেকেও তাহাজ্জুদ নামাজ রীতিমতো আদায় করে তারা
সর্বাধিক পুণ্যবান। হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, সংসারী ঈমানদার ব্যক্তির এক রাকাত
তাহাজ্জুদ নামাজে সত্তর রাকাত নামাজের সওয়াব অর্জিত হয়। ঐ ব্যক্তির জন্য
সদাসর্বদা বেহেশতের দরজা খোলা থাকে এবং ঐ পুণ্যের ফলে আল্লাহ তা'আলা তার
পিতামাতার গুনাহ মাফ করে দেন।
ইশরাকের নামাজ
ইশরাকের নামাজের ওয়াক্ত হলো, ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয়ের পরে যখন পূর্বাকাশ
স্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয় তখন পড়তে হয়। সূর্য কিছু ওপরে ওঠার পর হতে প্রায়
দু'ঘন্টা কালব্যাপি এর সময় বিদ্যমান থাকে ।
ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিইয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকআতাই সালাতিল ইশরাকি সুন্নাতি
রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার ।
অর্থ : আমি আল্লাহ তা'আলার জন্য কেবলামুখি হয়ে ইশরাকের দু'রাকাত সুন্নত নামাজ
আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম
ফজরের নামাজ শেষ করে জায়নামাজে নিবিষ্ট মনে বসে
দোয়া-দরুদ পাঠ
করবেন। পরে সূর্য উদয় হলে দুই বার চার রাকাত নামাজ আদায় করবেন অন্যান্য
সুন্নত এবং নফল নামাজের মত।
ইশরাকের নামাজ পড়ার ফজিলত
ইশরাকের নামাজ সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা। এ নামাজে অশেষ সওয়াব রয়েছে। কোনো
কোনো কিতাবে লিখিত আছে, এ নামাজ চার রাকাত আদায়কারী একটি নফল
হজ ও একটি উমরার
সওয়াব পাবে এবং আল্লাহ তা'আলা তার প্রতি দয়াবান হবেন। যদি কেউ ফজরের নামাজের
পরে দুনিয়াবী কাজ করার পর এ নামাজ আদায় করে তাতেও নামাজের সওয়াব পাবে।
ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময়
- ইশরাকের নামাজের ওয়াক্ত হলো, ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয়ের পরে যখন পূর্বাকাশ স্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয় তখন পড়তে হয়। সূর্য কিছু ওপরে ওঠার পর হতে প্রায় দু'ঘন্টা কালব্যাপি এর সময় বিদ্যমান থাকে ।
- চাশতের নামাজের সময় ইশরাক নামাজের পর হতে ঠিক দুপুর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থাকে । এ নামাজ চার রাকাত হতে বারো রাকাত পর্যন্ত আদায় করা যায়।
চাশতের নামাজ
চাশতের নামাজের নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিইয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকআতাই সালাতিদ্ব দুহা সুন্নাতি
রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার ।
অর্থ : আমি আল্লাহ তা'আলার জন্য কেবলামুখি হয়ে চাশতের দু'রাকাত সুন্নত নামাজ
আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
চাশতের নামাজের ফজিলত
যারা নিয়মিত চাশতের নামাজ আদায় করেন তারা কোনো দিন অভাবে পতিত হয় না। এ নামাজ
সালাতুল যোহা নামেও পরিচিত।
চাশতের নামাজ কয় রাকাত
চাশতের নামাজ এর নির্দিষ্ট কোন রাকাত নেই আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী বা শারীরিক
সামর্থ্য অনুযায়ী ৪,৮,১২ বা তারও বেশি করতে পারেন ।
আরো পড়ুনঃ ম দিয়ে ছেলেদের নাম । স্মার্ট সিভি তৈরির নিয়ম । গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম । ইবরাহীম আ. এর কুরবানীর ইতিহাস
চাশতের নামাজের নিয়ম ও সময়
চাশতের নামাজের সময় ইশরাক নামাজের পর হতে ঠিক দুপুর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত
থাকে । এ নামাজ চার রাকআত হতে বারো রাকআত পর্যন্ত আদায় করা যায়। তবে কেউ কেউ
বিশ রাকআতের কথাও বলেছেন।
আরো পড়ুনঃ কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় ।
আ দিয়ে ছেলেদের নাম
।
সাইবার ক্রাইম । কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত
তবে চার, বারো কিংবা বিশ রাকআত যাই পড়া হোকনা কেন দু'রাকআত করে আদায় করতে হবে।
এ নামাজও সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা । মহানবী রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রায়ই এ নামাজ
চার রাকআত আদায় করতেন।
যাওয়ালের নামাজ
যাওয়ালের নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়
যাওয়ালের নামাজ এর সময় সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার পরবর্তী মুহূর্ত হতে
আরম্ভ হয়ে আসরের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে। এ নামাজ চার রাকআত এক নিয়তে
আদায় করতে হয় । সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যে কোনো সূরা মিলিয়ে এ নামাজ আদায় করা
যায় ।
যাওয়ালের নামাজ আদায়কারী অগণিত সওয়াবের অধিকারী হয় । বর্ণিত আছে যে, এ নামাজ
আদায়কারীর সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা শরিক হয়ে থাকে এবং তার জন্য রাত পর্যন্ত
আল্লাহ তা'আলার শাহী দরবারে
মাগফিরাত কামনা
করতে থাকে ।
যাওয়ালের নামাজের নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিইয়া লিল্লাহি তা'আলা আরবা'আ রাকা'আতি সালাতিয় যাওয়ালি
সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি
আল্লাহু আকবার ।
অর্থ : আমি আল্লাহ তা'আলার জন্য কেবলামুখি হয়ে যাওয়ালের চার রাকআত সুন্নত নামাজ
আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত । ইশরাকের নামাজ । ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময় । যাওয়ালের নামাজ : লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সামনে তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত , তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি
নফল , ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম , চাশতের নামাজের নিয়ত , ইশরাক ও চাশতের
নামাজের সময় , যাওয়ালের নামাজ , ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করলাম।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যে কোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে
কমেন্ট করে জানাতে পারেন। খুব দ্রুত আমরা আপনাদের প্রশ্ন এবং মতামতের উত্তর
প্রদান করা হবে ইনশাআল্লাহ। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।।ধন্যবাদ।।