সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ । সূরা ইয়াসিন সম্পূর্ণ
প্রিয় পাঠক আমরা সকলেই জানি সূরা ইয়াসিন অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা। আমরা
অনেকেই সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ সহ জানতে চাই।
তাই আজকে আমরা আপনাদের সামনে সূরা ইয়াসিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আমাদের আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ ,
সূরা ইয়াসিন সম্পূর্ণ , সূরা ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ সহ , সূরা ইয়াসিন অর্থসহ এবং
সূরা ইয়াসিন ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার
অনুরোধ রইল।
সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ । সূরা ইয়াসিন সম্পূর্ণ । সূরা ইয়াসিন অর্থসহ
সূরা ইয়াসিন পবিত্র কুরআন শরীফের ৩৬ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৮৩ টি। রুকু
সংখ্যা ০৫ টি। সূরা ইয়াসিন মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এটি ২২ তম পারার শেষ অংশে
অবস্থিত ।সূরার প্রথম আয়াত ইয়া-সিন থেকে এই সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
এই সুরাতে মহান আল্লাহতালা
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর রিসালাতের সত্যায়ন , রিসালাত অস্বীকার করার পরিণতি , দুইজন নবীর দাওয়াত ও
তাদের কওমের কর্মকাণ্ডের উদাহরণ, কেয়ামতের বিস্ফোরণ , কেয়ামতের বিভিন্ন চিত্র,
জান্নাতি ও জাহান্নামীদের অবস্থার বর্ণনা, প্রত্যেক অপরাধীর বিরুদ্ধে তার
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সাক্ষ্য দিবে , প্রতিটি সৃষ্টি আল্লাহ জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি
করেছেন, রাত দিন আবর্তন , চাঁদের আবর্তন , সূর্যের ঘূর্ণায়ন এবং আল্লাহ তায়ালার
সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা ইয়াসিন সম্পূর্ণ । সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ
- ইয়াসীন
- ওয়াল কুরআনিল হাকীম
- ইন্নাকা লামিনাল্ মুরসালীন
- আলা সিরাত্বিম্ মুস্তাক্বীম
- তানযীলাল আযীযির রাহীম
- লিতুনযিরা ক্বাওমাম মা উনযিরা আবাউহু ফাহুম গফিলূন
- লাক্কাদ্ হাকাল কাওলু আলা আক্বসারিহিম ফাহুম লা ইউমিনূন
- ইন্না জাআলনা ফী আনাক্বিহিম্ আগলালান ফাহিয়া ইলাল আযকানি ফাহুম্ মুক্বমাহূন
- ওয়া জা‘আলনা মিম্ বাইনি আইদীহিম্ সাদ্দাওঁ ওয়ামিন্ খালফিহিম সদ্দান ফাআগ্শাইনাহুম্ ফাহুম্ লা-ইয়ুবসিরূন
- ওয়া সাওয়াউন্ আলাইহিম্ আআনযারতাহুম আম্ লাম্ তুনযিরহুম লা-ইয়ুমিনূন
- ইন্নামা তুনযিরু মানিত্তাবাআয্ যিকরা ওয়া খাশিয়ার রহমানা বিল্ গইবি, ফাবাশশিরহু বিমাগফিরাতিওঁ ওয়া আজরিন্ কারীম
- ইন্না নাহনু নুহয়িল মাওতা ওয়া নাকতুবু মা ক্বদ্দামূ ওয়া আসারাহুম, ওয়া কুল্লা শাইয়িন্ আসাইনাহু ফী ইমামিম্ মুবীন
- ওয়াদ্বরিব লাহুম মাসালান আসহাবাল্ কারইয়াহ্ ইয্ জায়াহাল মুরসালূন
- ইয্ আসাল্না ইলাইহমুনাইনি ফাকায্যাবূ হুমা ফাআয্যানা বিসালিসিন্ ফাক্বাল্ ইন্না ইলাইকুম্ মুরসালূন
- কলূ মা আনতুম্ ইল্লা বাশারুম্ মিসলূনা, ওয়ামা আনযালার রহমানু মিন্ শাইয়িন্ ইন্ আনতুম্ ইল্লা তাকযিবুন
- কলূ রব্বুনা ইয়ালামু ইন্না ইলাইকুম্ লামুরসালূন
- ওয়ামা ---আলাইনা ইল্লাল্ বালাগুল মুবীন
- কলূ ইন্না তাত্বইয়্যারনা বিকুম, লাইললাম্ তানতাহু লানারজুমান্নাকুম ওয়া লাইয়াস্সান্নাকুম্ মিন্না আযাবুন্ আলীম
- কলূ ত্বায়িরুকুম্ মাআকুম, আ’ইন্ যুক্কিরতুম, বাল্ আনতুম্ ক্বাওমুম্ মুসরিফূন
- ওয়া জা-য়া মিন আকসাল মাদীনাতি রাজুলুই ইয়াসআ কলা ইয়া কওমিত্তাবিউল মুরসালীন
- ইত্তাবিঊ মাল্লা ইয়াস আলুকুম্ আজরাওঁ ওয়াহুম্ মুহতাদূন
- ওয়া মা-লিয়া লা-আবুদুল্লাযী ফাত্বারানী ওয়া ইলাইহি তুরজাউন
- আআত্তাখিযূ মিন্ দুনিহী আলিহাতান্ ইয়্যুরিনির রহমানু বিদুররিল লা-তুগনী আন্নী শাফাআতুহুম শাইয়াওঁ ওয়ালা ইয়ুনকিযূন
- ইন্নী ইযাল লাফী দ্বলালিম্ মুবীন্
- ইন্নী আমানতু বিরাব্বিকুম ফাসমা'ঊন্
- কীলাদ্ খুলিল জান্নাতা, কলা ইয়া লাইতা কওমীইঁ ইআলামূন
- বিমা গফারালী রব্বী ওয়া জাআলানী মিনাল মুকরামীন
- ওয়া মা-আনযালনা আলা ক্বওমিহী মীম্ বাদিহী মিন জুনদিম্ মিনাস্ সামায়ি ওয়ামা কুন্না মুনযিলীন
- ইন্ কানাত্ ইল্লা সইহাতাওঁ ওয়াহিদাতান্ ফাইযাহুম্ খামিদূন
- ইয়া হাস্রাতান আলাল ইবাদি, মা ইয়াতীহিম্ মির্ রসূলিন্ ইল্লা কানু বিহী ইয়াসতাহযিউন
- আলাম্ ইয়ারাও কাম্ আহলাকনা কবলাহুম্ মিনাল কুরূনি আন্নাহুম্ ইলাইহিম্ লা ইয়ারজিঊন
- ওয়া ইন্ কুল্লুল লাম্মা জামীউল লাদাইনা মুহদারুন
- ওয়া আয়াতুল্ লাহুমুল আরদুল্ মাইতাতু, আহ্ইয়াইনাহা ওয়া আখরাজনা মিন্হা হাব্বান ফামিন্হু ইয়াকুলূন
- ওয়া জাআল্না ফীহা জান্নাতিম্ মিন্ নাখীলিওঁ ওয়া আ'নাবিওঁ ওয়া ফাজ্জারনা ফীহা মিনাল উয়ূন
- লিইয়া কুলূ মিন্ সামারিহী, ওয়ামা আমিলাতহু আইদীহিম, আফালা ইয়াশকুরূন
- সুবহানাল্লাযী খালাকাল আযওয়াজা কুল্লাহা মিম্মা তুম্বিতুল আরদু ওয়া মিন আনফুসিহিম্ ওয়া মিম্মা লা-ইয়ালামূন
- ওয়া আয়াতুল্ লাহুমুল লাইলু, নাসলাখু মিনহুন্ নাহারা ফাইযাহুম্ মুলিমূন
- ওয়াশ্ শাম্স তাজরী লিমুসতাক্বাররিল্লাহা, যালিকা তাক্বদীরুল আযীযিল আলীম
- ওয়াল কামারা কদ্দারনাহু মানাযিলা হাত্তা আদা কাল্ উরজূনিল কাদীম
- লাশ শাম্স্ ইয়ামবাগী লাহা আন তুদরিকাল্ কামারা ওয়া লাল্লাইলু সাবিকুন্ নাহারা, ওয়া কুলুন ফী ফালাকিই ইয়াসবাহুন
- ওয়া আ-ইয়াতুল লাহুম আন্না হামালনা যুররিইয়্যাতাহুম ফিল্ ফুলকিল্ মাশহূন
- ওয়া খলাকনা লাহুম্ মিম্ মিসলিহী মা ইয়ারকাবূন
- ওয়া ইন্ নাশা নুগরিক্বহুম্ ফালা সারীখা লাহুম ওয়া লাহুম ইয়ুনক্বাযুন
- ইল্লা রহমাতাম্ মিন্না ওয়া মাতাআন্ ইলাহীন
- ওয়া ইযা কীলা লাহুমুত্ তাকূ মা বাইনা আইদীকুম্ ওয়ামা খালফাকুম্ লাআল্লাকুম্ তুরহামূন
- ওয়া মা-তাতীহিম্ মিন্ আয়াতিম মিন আয়াতি রব্বিহিম ইল্লা কানূ আন্হা মুরিদ্বীন
- ওয়া ইযা কীলা লাহুম্ আনফিকূ মিম্মা রাযাক্বাকুমুল্লাহু, কলাল লাযীনা কাফারূ লিল্লাযীনা আমানু আনুত্বইমু মাল্ লাও ইয়াশাউল্লাহু আত্মাআমাহ্, ইন্ আনতুম্ ইল্লা ফী দ্বলালিম্ মুবীন
- ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা হাযাল ওয়া‘দু ইন কুনতুম্ সদিক্বীন
- মা ইয়ানযুরূনা ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান তাখুযুহুম্ ওয়াহুম্ ইয়াখিস সিমূন
- ফালা ইয়াসতাত্বী উনা তাওসিয়াতাওঁ ওয়ালা ইলা আহলিহিম্ ইয়ারজি'উন্
- ওয়া নুফিখা ফীসসূরি ফাইযাহুম্ মিনাল আজ্দাসি ইলা রব্বিহিম্ ইয়াংসিলূন
- ক্বাল্ ইয়া ওয়াইলানা মাম্ বা'আসানা মিন্ মারকাদিনা হাযা মা ওয়া আদার্ রহমানু ওয়া সদাক্বাল মুরসালূন
- ইন কা-নাত্ ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়াহিদাতান ফাইযাহুম্ জামীউল লাদাইনা মুহদারুন
- ফাল্ইয়াওমা লা তুযলামু নাফসুন শাইয়াওঁ ওয়ালা তুজযাওনা ইল্লা মা-কুংতুম্ তাআমালূন
- ইন্না আসহাবাল জান্নাতিল্ ইয়াওমা ফী শুগুলিন্ ফাকিহুন্
- হুম্ ওয়া আযওয়াজুহুম্ ফী যিলালিন আলাল্ আরায়িকি মুত্তাকিউন
- লাহুম্ ফীহা ফাকিহাতুওঁ ওয়া লাহুম্ মা ইয়াদ্দাঊন্
- সালামুন, কাওয়ালাম্ মির্ রব্বির্ রহীম
- ওয়ামতাযুল ইয়াওমা আইয়্যুহাল্ মুজরিমূন
- আলাম্ আহাদ ইলাইকুম ইয়া-বানী-আদামা আল্লা তাবুদুশ শাইত্বানা, ইন্নাহু লাকুম্ আদুয়্যুম্ মুবীন
- ওয়া আনিবূদূনী হাযা সিরাতুম মুস্তাকীম
- ওয়ালাকদ আদ্বাল্লা মিনকুম্ জিবিল্লান কাসীরা, আফালাম্ তাকূনূ তাকিলূন
- হাযিহী জাহান্নামুল্লাতী কুনতুম্ তূআদূন
- ইসলাওহাল্ ইয়াওমা বিমা কুনতুম্ তাক্ফুরূন
- আল্ ইয়াওমা নাতিমু আলা আফওয়াহিহিম্ ওয়া তুকাল্লিমূনা আইদীহিম্ ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম্ বিমা কানূ ইয়াকসিবুন্
- ওয়া লাও নাশাউ লাতামাসনা আলা আইউনিহিম্ ফাস্তাবাকুস সিরাত্বা ফাআন্না ইয়ুবসিরুন্
- ওয়ালাও নাশাউ লামাসাখ্লাহুম্ আলা মাকানাতিহিম্ ফামাতাত্বাউ মুদ্বিয়্যাওঁ ওয়ালা ইয়ারজিঊন
- ওয়া মান্ নুআমিরহু নুনাক্কিস্হু ফিল্ খলকি, আফালা ইয়াকিলূন্
- ওয়ামা আল্লামনাহুশ্ শিরা ওয়া মা-ইয়ামবাগী লাহু, ইন্ হুওয়া ইল্লা যিকরুওঁ ওয়া কুরআনুম্ মুবীন
- লিইয়ুনযিরা মান কানা হাইয়্যাওঁ ওয়া ইয়াহিক্কাল্ ক্বওলু আলাল কাফিরী
- আওয়ালাম্ ইয়ারাও আন্না খলাকনা লাহুম্ মিম্মা আমিলাত্ আইদীনা আন্আমান ফাহুম্ লাহা মালিকূন
- ওয়া যাল্লাল্নাহা লাহুম্ ফামিন্হা রাকুবুহুম্ ওয়া মিন্হা ইয়াকুলূন
- ওয়া লাহুম্ ফীহা মানাফিউ ওয়া মাশারিবু আফালা ইয়াশকুরূন
- ওয়াত্তাখাযূ মিন দূনিল্লাহি আলিহাতাল লাআল্লাহুম্ ইউনসারূন
- লা ইয়াসতাত্বীঊনা নাসরাহুম্ ওয়া হুম লাহুম্ জুনদুম্ মুহদ্বারূন
- ফালা ইয়াহযুনকা ক্বাওলুহুম্, ইন্না নালামু মা ইউসিররূনা ওয়ামা ইউলিনূন্
- আওয়া লাম ইয়ারাল্ ইসানু আন্না খলাক্বনাহু মিন্ নুত্বফাতিন ফাইযা হুয়া খাসীমুম্ মুবীন
- ওয়া দ্বারাবা লানা মাসালাওঁ ওয়া নাসিয়া খাল্ক্হু, কালা মাইয়্যুয়িল্ ইযামা ওয়া হিয়া রামীম্
- কুল ইয়ুহঈহাল্লাযী আনশাআহা আউওয়ালা মাররাহ, ওয়া হুওয়া বিকুল্লি খালকিন আলীম
- আল্লাযী জাআলা লাকুম্ মিনাশ্ শাজারি আখদারী নারান ফাইযা-আনতুম্ মিন্হু তূকিদূন
- আওয়া লাইসাল লাযী খলাকস সামা-ওয়াতি ওয়াল্ আরদ্বা বিক্বা-দিরিন্ আলা আই ইয়াখলুকা মিসলাহুম্, বালা, ওয়া হুওয়াল্ খল্লাকুল্ আলীম
- ইন্নামা আমরুহূ ইযা আরা-দা শাইয়ান্ আইয়্যাকুলা লাহূ কুন ফাইয়াকূন
- ফাসুবহানাল্লাযী বিয়াদিহী মালাকূতু কুল্লি শাইয়িওঁ ওয়া ইলাইহি তুরজাউন ।
সূরা ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ সহ । সূরা ইয়াসিন অর্থসহ
- ইয়া-সীন
- প্রজ্ঞাময় কুরআনের কসম।
- নিশ্চয় আপনি প্রেরিত রাসূলদের একজন।
- সরল পথে প্রতিষ্ঠিত।
- কুরআন পরাক্রমশালী পরম দয়ালু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ।
- যাতে আপনি এমন এক জাতিকে সতর্ক করেন, যাদের পূর্ব পুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি, ফলে তারা গাফেল।
- তাদের অধিকাংশের জন্য শাস্তির বিষয় অবধারিত হয়েছে, সুতরাং তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।
- আমি তাদের গর্দানে চিবুক পর্যন্ত বেড়ি পরিয়েছি, ফলে তাদের মস্তক ঊর্ধ্বমুখি হয়ে গেছে।
- আমি তাদের সামনে ও পিছনে প্রাচীর স্থাপন করেছি, অতঃপর তাদেরকে আবৃত করে দিয়েছি, ফলে তারা দেখে না।
- আপনি তাদেরকে সতর্ক করুন বা না করুন তাদের পক্ষে উভয়ই সমান, তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।
- আপনি কেবল তাদেরকেই সতর্ক করতে পারেন, যারা উপদেশ অনুসরণ করে এবং দয়াময় আল্লাহ্কে না দেখে ভয় করে, অতএব আপনি তাদেরকে সুসংবাদ দিন ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের।
- আমিই মৃতদেরকে জীবিত করি ও তাদের কর্মসমূহ লিপিবদ্ধ করি এবং আমি প্রত্যেক বস্তু স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি।
- আপনি তাদের কাছে সে জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করুন, যখন সেখানে রাসূলগণ আগমন করেছিলেন।
- আমি তাদের কাছে দুই জন রাসূল প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর তারা তাঁদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, তখন আমি তাঁদেরকে শক্তিশালী করলাম তৃতীয় একজনের মাধ্যমে, তাঁরা সবাই বললেন, আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
- তারা বলল, তোমরা আমাদের মতোই মানুষ, রহমান আল্লাহ্ কিছুই নাজিল করেননি, তোমরা কেবল মিথ্যাই বলে যাচ্ছ।
- রাসূলগণ বললেন, আমাদের পরওয়ারদেগার জানেন, আমরা অবশ্যই তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
- পরিষ্কারভাবে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব।
- তারা বলল, আমরা তোমাদেরকে অশুভ অকল্যাণকর দেখছি, যদি তোমরা বিরত না হও তবে অবশ্যই তোমাদেরকে পাথরের আঘাতে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে।
- রাসূলগণ বললেন, তোমাদের অকল্যাণ তোমাদের সাথে, এটা কি এ জন্য যে, আমরা তোমাদেরকে সৎ উপদেশ দিয়েছি ? বস্তুত তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী ।
- অতঃপর শহরের প্রান্তভাগ থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলগণের অনুসরণ করো।
- অনুসরণ করো তাদের যারা তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় কামনা করে না, অথচ তাঁরা সুপথপ্রাপ্ত।
- আমার কি হলো, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁর কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে, আমি তাঁর ইবাদত করব না ?
- আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্যদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করব ? করুণাময় যদি আমাকে কষ্টে নিপতিত করতে চান তবে তাদের সুপারিশ আমার কোনোই কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে রক্ষাও করতে পারবে না ।
- এরূপ করলে আমি প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হব।
- আমি নিশ্চিতভাবে তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম, অতএব আমার কাছ থেকে শুনে নাও।
- তাকে বলা হলো, জান্নাতে প্রবেশ করো; সে বলল! হায় আমার সম্প্রদায় যদি কোনোক্রমে জানতে পারতো
- যে, আমার পরওয়ারদেগার আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
- তারপর আমি তার সম্প্রদায়ের ওপর আকাশ থেকে কোনো বাহিনী অবতীর্ণ করিনি এবং আমি (বাহিনী) অবতরণকারীও ছিলাম না।
- বস্তুত এ ছিল এক মহানাদ, অতঃপর সঙ্গে সঙ্গে সবাই স্তব্ধ হয়ে গেল ।
- বান্দাদের জন্যে আক্ষেপ, তাদের কাছে এমন কোনো রাসূলই আগমন করেনি যাদের প্রতি তারা বিদ্রূপ করেনি ।
- তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি, তাদের পূর্বে আমি কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি যে, তারা তাদের মধ্যে আর ফিরে আসবে না ।
- ওদের সবাইকে সমবেত অবস্থায় আমার দরবারে উপস্থিত হতে হবে।
- তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত পৃথিবী, আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, তারা তা থেকে ভক্ষণ করে।
- আমি তাতে সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং প্রবাহিত করি তাতে ঝরণা।
- যাতে তারা তার ফল খায়, তাদের হাত এগুলো সৃষ্টি করেনি অতঃপর তারা কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে না।
- পবিত্র তিনি যিনি জমিন থেকে উৎপন্ন উদ্ভিদ ও মানুষকে এবং যা তারা জানে না তাদের প্রত্যেককে জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন।
- তাদের জন্য এক নিদর্শন রাত্রি, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে থেকে যায়।
- সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে, এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ।
- চন্দ্রের জন্য আমি বিভিন্ন মঞ্জিল নির্ধারিত করেছি, অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়।
- সূর্য নাগাল পেতে পারে না চাঁদের এবং রাত আগে চলে দিনের, প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষ পথে সন্তরণ করে।
- তাদের জন্যে একটি নিদর্শন হচ্ছে আমি তাদের সন্তান-সন্ততিকে বোঝাই নৌকায় আরোহণ করিয়েছি
- এবং তাদের জন্য নৌকার অনুরূপ যানবাহন সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আরোহণ করে।
- আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে নিমজ্জিত করতে পারি, তখন তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই এবং তারা পরিত্রাণও পাবে না
- কিন্তু আমারই পক্ষ থেকে কৃপা এবং তাদেরকে কিছুকাল জীবন উপভোগ করার সুযোগ দেওয়ার কারণে তা করি না।
- আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা সামনের আজাব ও পিছনের আজাবকে ভয় করো, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়, তখন তারা তা আগ্রাহ্য করে।
- যখনই তাদের পালনকর্তার নির্দেশাবলীর মধ্য থেকে কোনো নির্দেশ তাদের কাছে আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
- যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করো, তখন কাফিররা মুমিনণগকে বলে, ইচ্ছা করলে আল্লাহ্ই যাকে খাওয়াতে পারতেন আমরা তাকে কেন খাওয়াব ?
- তারা বলে, তোমরা সত্যবাদী হলে বলো, এ ওয়াদা কবে পূর্ণ হবে ?
- তারা কেবল একটা ভয়াবহ শব্দের অপেক্ষা করছে, যা তাদেরকে আঘাত করবে তাদের পারস্পরিক বাকবিতণ্ডাকালে।
- তখন তারা অসিয়ত করতেও সক্ষম হবে না এবং তাদের পরিবার- পরিজনের কাছেও ফিরে যেতে পারবে না।
- আর শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখনই তারা বলবে হায়! আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের ঘুম থেকে জাগ্রত করল ?
আরো পড়ুন: উকিল/অ্যাডভোকেট/ব্যারিস্টার হতে কি করবেন ? । হ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম । বাংলাদেশের ৬৬ তম জেলার নাম কি ?
- রহমান আল্লাহ্ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন। এটা তো হবে কেবল এক মহানাদ, সে মুহূর্তেই তাদের সবাইকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে।
- আজকের দিনে কারও প্রতি জুলুম করা হবে না এবং তোমরা যা করবে কেবল তারই প্রতিদান পাবে।
- এদিন জান্নাতীরা আনন্দে মশগুল থাকবে।
- তারা এবং তাদের স্ত্রীরা উপবিষ্ট থাকবে সায়াময় পরিবেশে আসনে হেলান দিয়ে ।
- সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফল-মূল এবং যা তারা চাবে।
- করুণাময় পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে সালাম ।
- হে অপরাধীরা! আজ তোমরা আলাদা হয়ে যাও।
- হে বনী আদম! আমি কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি, শয়তানের ইবাদত করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
- এবং আমার ইবাদত করো, এটাই সরল পথ।
- শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে, তবুও কি তোমরা বুঝ না ?
- এই সে জাহান্নাম যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেওয়া হতো।
- তোমাদের কুফরের কারণে আজ এতে প্রবেশ করো।
- আজ আমি তাদের মুখে মোহর এটে দেব, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।
- আমি ইচ্ছা করলে তাদের দৃষ্টিশক্তি বিলুপ্ত করে দিতে পারতাম, তখন তারা পথের দিকে দৌড়াতে চাইলে কেমন করে দেখতে পেতো ?
- আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে স্ব-স্ব স্থানে আকার বিকৃত করতে পারতাম, ফলে তারা আগেও চলতে পারতো না এবং পেছনেও ফিরে যেতে পারতো না।
- আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি তাকে সৃষ্টিগত পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেই; তবুও কি তারা বুঝে না ?
- আমি রাসূলকে কবিতা শিক্ষা দেইনি এবং তা তার জন্য শোভনীয়ও নয়; কারণ এটা তো এক উপদেশ ও প্রকাশ্য কুরআন।
- যাতে তিনি সতর্ক করেন জীবিতকে এবং যাতে কাফিরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
- তারা কি দেখে না, আমি তাদের জন্য নিজ হাতে চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তারাই এগুলোর মালিক ।
- আমি এগুলোকে তাদের অধীনস্থ করে দিয়েছি, ফলে এদের মধ্যে কতগুলো তাদের বাহন এবং কতগুলো তারা ভক্ষণ করে।
- তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে অনেক উপকারিতা ও পানীয় রয়েছে; তবুও তারা শুকরিয়া আদায় করে না ?
- তারা আল্লাহর পরিবর্তে অনেক উপাস্য গ্রহণ করেছে, যাতে তারা সাহায্য প্রাপ্ত হতে পারে।
- অথচ এসব উপাস্য তাদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম হবে না এবং এগুলো তাদের বাহিনীরূপে ধৃত হয়ে আসবে।
- অতএব তাদের কথা যেন আপনাকে দুঃখিত না করে । আমি জানি যা তারা গোপনে করে এবং যা তারা প্রকাশ করে ।
- মানুষ কি দেখে না, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি বীর্য থেকে ? অতঃপর তখনই সে হয়ে গেল প্রকাশ্য বাকবিতণ্ডাকারী ।
- সে আমার সম্পর্কে এক অদ্ভুত কথা বর্ণনা করে, অথচ সে নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়; সে বলে, কে জীবিত করবে অস্থিসমূহকে যখন সেগুলো পঁচে-গলে যাবে ?
- বলুন, যিনি প্রথম বার সেগুলো সৃষ্টি করেছেন, তিনিই জীবিত করবেন, তিনি সর্বপ্রকার সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত।
- যিনি তোমাদের জন্য সবুজ বৃক্ষ থেকে আগুন উৎপন্ন করেন, তখন তোমরা তা থেকে আগুন জ্বালাও।
- যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন ? হাঁ, তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
- তিনি যখন কোনো কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলেন, হও! তখনই তা হয়ে যায়।
- অতএব পবিত্র তিনি, যাঁর হাতে সবকিছুর রাজত্ব এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
সূরা ইয়াসিন ফজিলত
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে
সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং যে সূরা দুখান পাঠ করে তাকেও
ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
অপর একটি হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রাতে
সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সূরা ইয়াসিন একবার
পাঠ করলে সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ খতম করার সওয়াব পাওয়া যায়।
অপর এক বর্ণনায় পাওয়া যায়: যে ব্যক্তি সূরা ইয়াসিন নিয়মিত পাঠ করবে তার
জন্য বেহেশতের আটটি দরজায় উন্মুক্ত থাকবে এবং কিয়ামতের দিন সূরা ইয়াসিন
পাঠকারীর জন্য এই সূরা সুপারিশ করবে।
সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ । সূরা ইয়াসিন সম্পূর্ণ । সূরা ইয়াসিন অর্থসহ : লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সামনে সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ , সূরা ইয়াসিন
সম্পূর্ণ , সূরা ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ সহ , সূরা ইয়াসিন অর্থসহ এবং সূরা ইয়াসিন
ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করুন এবং গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।