কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম - কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো
প্রিয় পাঠক আমরা অনেকেই কৃমির সমস্যায় ভুগে থাকি। আমরা অনেকেই জানতে চাই কৃমির
ওষুধ খাওয়ার নিয়ম এবং কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো হবে এ সম্পর্কে। তাই আজকে আমরা
হাজির হয়েছি কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম এবং কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো তার বিস্তারিত
নিয়ে।
আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম , শিশুদের কৃমির ঔষধ
খাওয়ার নিয়ম , কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো , অতিরিক্ত কৃমি হলে করনীয় , কৃমির লক্ষণ
, কৃমি প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই পোস্টটি শেষ
পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম - কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো
কৃমি কি?
কৃমি হচ্ছে এক রকমের পরজীবী প্রাণী যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে বাস করে
সেখান থেকে খাবার গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। সাধারণত খাবার, পানি, বাতাস মলমূত্র,
সংস্পর্শের মাধ্যমে কৃমি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এটি দেখতে লম্বা নলাকার এর
কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকে না। কৃমি বিভিন্ন রকম হতে পারে যেমন:
- গোল কৃমি
- সুতা কৃমি
- চ্যাপ্টা কৃমি
- ফিতা কৃমি ইত্যাদি।
কৃমি রোগের লক্ষণ
কৃমি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে কোন লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে কৃমি বৃদ্ধির সাথে
সাথে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। যেমন :
- পেটে ব্যথা
- বমি
- বমি বমি ভাব
- পেট ফুলে যাওয়া
- আমাশয়
- ওজন কমে যাওয়া
- ক্ষুধা কম লাগা
- মলদ্বারে চুলকানি ইত্যাদি।
কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক নিচে কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
- কৃমি সংক্রামক হওয়ায় পরিবারের সকলের একত্রে কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত এতে করে সহজেই কৃমি থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
- প্রতি তিন মাস পর পর পরিবারের সকলেই কৃমির ওষুধ খেতে পারেন
- প্রথম ডোজ খাওয়ার ৩-৭ দিনের মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আরেকটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
- ০২ বছরের বছরের কম বয়সী শিশুদের কৃমির ওষুধ না খাওয়ানোই ভালো। তবে সংক্রমণ বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুদের জন্য নির্ধারিত সিরাপ খাওয়ানো যায়।
- গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত যেকোনো সময়েই কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী সেবন করা যায়। অনেকেই মনে করেন গ্রীষ্মকালে কিংবা শীতকালে কৃমির ওষুধ খাওয়া যায় না এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।
- কৃমির ওষুধের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তাই নিশ্চিন্তে এটি আপনি এবং আপনার পরিবার সেবন করতে পারবেন। ভালো ফলাফলের জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এবং কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী সেবন করবেন।
অতিরিক্ত কৃমি হলে করনীয়
একটি সংগ্রামক ব্যাধি তাই কৃমি আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন
করতে হবে। অতিরিক্ত কৃমি হলে করনীয় কি আসুন এবার সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- অতিরিক্ত কৃমি হলে করনীয় হচ্ছে প্রথমেই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিবারের সকলেই একত্রে কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম মেনে ক্রিমের ওষুধ সেবন করা।
- সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করা
- শাকসবজি ফলমূল ইত্যাদি খাবার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া।
- টয়লেট বাথরুম গোসলখানা ইত্যাদি সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
- নিয়মিত বাড়ির আশেপাশে বন জঙ্গল ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা
- বাইরের খোলা খাবার না খাওয়া
- টয়লেট শেষে সাবান দিয়ে ভালো করে দুই হাত পরিষ্কার করা
- রান্নাঘর নিয়মিত পরিষ্কার করা
- বাচ্চাদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে খালি পায়ে খেলাধুলা না করা
- গাজর, শসা, কাঁচা হলুদ, মধু, নিম পাতার রস, কাঁচা পেঁপে, কুমড়ার বিচি, রসুন, লবঙ্গ, নারকেল ইত্যাদি কৃমি প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী উপাদান।
শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম
নিচে শিশুদের কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
- দুই বছরের নিজের শিশুদের কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
- শিশুদের কৃমির ওষুধ খাওয়ার সময় অবশ্যই পরিবারের বাকি সদস্যরাও কৃমির ওষুধ খেয়ে নিবেন। এতে করে পরিবারের সকলেই সহজেই কৃমি থেকে নিস্তার পাবেন কৃমির সংক্রামক হওয়ায় একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তাই যখন ক্রিমের ওষুধ খাবেন শিশুসহ পরিবারের সকলেই একত্রে খেয়ে নি সেবন করবেন।
- শিশুদের জন্য কৃমির সিরাপ রয়েছে বাচ্চাদের জন্য এটি সেবন করলে অধিক ফল পাওয়া যায়।
- প্রথম রোজ সেবনের ৭ থেকে ১০ দিন পরে অবশ্যই দ্বিতীয় ডোজ সেবন করতে হবে তা না হলে পুনরায় কৃমি সংক্রমনের সম্ভাবনা থেকে যাবে।
- প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী কৃমির ওষুধ সেবন করলে সহজেই কৃমি থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
- তারপরেও যদি সংক্রমণের মাত্রা বেশি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো
বাংলাদেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি গুণগত মান সম্পন্ন কৃমির ওষুধ উৎপাদন এবং
বিক্রি করে থাকে। আপনি অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে কৃমির ওষুধ কোনটা ভালো
হবে তা জেনে নিয়ে সেবন করবেন। নিচে কয়েকটি কৃমির ওষুধের নাম দেওয়া হল:
- Alben-Ds _____ SKF Pharmaceuticals Ltd.
- Alben _____ SKF Pharmaceuticals Ltd.
- Almex _____ Square Pharmaceuticals Ltd.
- Albengen-DS ________ Biogen Pharmaceuticals Ltd.
- Ben-A ______________ ACME Labrotories .
- Estazol ______________ Ibn Sina Pharmaceuticals Ltd.
- Alphin DS ________ Beximco Pharmaceuticals Ltd.
- Abentel _________ Arisropharma Ltd.
- Albendol ___________Globex Pharmaceuticals Ltd.
- Solas _________ Opsonin Pharmaceuticals Ltd.
কৃমি প্রতিরোধের উপায়
আমরা সবাই জানি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম তাই কিনতে আক্রান্ত হওয়ার
পূর্বেই কৃমি প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন তাহলে আমরা এক নজরে দেখে
আসি কৃমি প্রতিরোধের উপায় সমূহ:
- সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করা
- শাকসবজি ফলমূল ইত্যাদি খাবার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া।
- টয়লেট, বাথরুম, গোসলখানা ইত্যাদি সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
- নিয়মিত বাড়ির আশেপাশে বন জঙ্গল ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা
- বাইরের খোলা খাবার না খাওয়া
- টয়লেট শেষে সাবান দিয়ে ভালো করে দুই হাত পরিষ্কার করা
- বাইরে থেকে আসার পর হাত পা মুখ খুবই ভালোভাবে পরিষ্কার করা।
- রান্নাঘর নিয়মিত পরিষ্কার করা
- বাচ্চাদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে খালি পায়ে খেলাধুলা না করা
- বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রী নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
- অন্যের ব্যবহৃত গামছা রুমাল চাদর ইত্যাদি ব্যবহার না করা
যে সকল খাবার খেলে কৃমি প্রতিরোধ করা সম্ভব :
- গাজর
- শসা
- কাঁচা হলুদ
- মধু
- নিম পাতার রস
- কাঁচা পেঁপে
- কুমড়ার বিচি
- রসুন
- লবঙ্গ
- নারিকেল
কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম - কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো : লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সামনে কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম , অতিরিক্ত কৃমি
হলে করনীয় , শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম , কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো , কৃমির
লক্ষণ , কৃমি প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করুন এবং
গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে
ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।