শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি
প্রিয় পাঠক বিভিন্ন ধরনের জ্বরের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা অনেকেই
সাপোজিটরি ব্যবহার করে থাকি। অনেক সময় শিশুদের ক্ষেত্রেও সাপোজিটরি ব্যবহারের
প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আপনি কি জানেন শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম ?
আপনি যদি শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম জেনে না থাকেন তাহলে আমাদের আজকের
পোস্টটি আপনার জন্য। আমাদের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি শিশুদের সাপোজিটরি
ব্যবহারের নিয়ম এবং শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি সে সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পারবেন।
শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি
সাপোজিটরি কি?
সাপোজিটরি মূলত এক ধরনের ঔষধ যা সাধারণত রোগীর পায়ুপথে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যে সকল ক্ষেত্রে রোগীরা ঔষধ সেবন করতে পারেন না বা যে সকল রোগী অচেতন অবস্থায়
থাকেন কিংবা এমন রোগী যিনি মুখের মাধ্যমে ওষুধ খেতে অক্ষম তাদের জন্য মূলত
সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুনঃ ভেরিকোসিল হলে কি বাচ্চা হবে না ? - ক্রিকেট বিশ্বের দুঃখী দেশসমূহ - সেক্সে রসুনের উপকারিতা
মানুষের শরীরে পায়ুপথের পাশে রক্তনালীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাপোজিটরি দ্রুত কাজ
করে। সাপোজিটরের আবরণ নরম হওয়ায় পায়ুপথ দিয়ে প্রবেশের পরে খুব দ্রুতই তা
রক্তের সাথে মিশে যেতে পারে যার ফলে রোগীকে সুস্থ করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে।
শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম
এক নজরে শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম বয়স ও ডোজ অনুযায়ী দেওয়া হলো:
- ০৩ মাস থেকে ০১ বছরের নিচে ------ ৬০ মিগ্রা. থেকে ১২০ মিগ্রা. -------দিনে সর্বোচ্চ ০৪ বার।
- ০১ বছর থেকে ০৫ বছর পর্যন্ত ------- ১২৫ মিগ্রা. থেকে ২৫০ মিগ্রা.---------দিনে সর্বোচ্চ ০৪ বার।
- ০৫ বছর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত -------- ২৫০ মিগ্রা. থেকে ৫০০ মিগ্রা.-------দিনে সর্বোচ্চ ০৪ বার।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাপোজিটরি ব্যবহারের সময় যে সকল সতর্কতা অবশ্যই মেনে চলবেন:
- যে সকল শিশু সাধারণত সিরাপ বা ট্যাবলেট মুখের মাধ্যমে গিলে খেতে পারে না কিংবা ওষুধ খেলে বমি করে তাদের জন্য প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- সাপোজিটরি ব্যবহারের পূর্বে সিরাপ কিংবা ক্যাপসুল খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।
- হালকা কুসুম গরম পানিতে গামছা ভিজিয়ে গামোচ করে দেওয়া কিংবা মাথায় হালকা কুসুম গরম পানি ঢালার চেষ্টা করবেন এতে করে জ্বর দ্রুত কমে যাবে। তারপরেও যদি জ্বর না কমে তখন সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন।
আরো পড়ুন: ৫৫১ টি পদে বাংলাদেশ রেলওয়ে এর বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি - মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার রচনা - ১০০+ হ দিয়ে ছেলেদের ইসলামিক নাম
- ১০২ ডিগ্রি এর নিচে জ্বর হলে সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন না।
- ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কখনোই সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন না।
- যে সকল বাচ্চার বয়স দুই মাসের কম তাদের জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার না করাই ভালো।
- শিশুর বয়স অনুযায়ী সাপোজিটরির ডোজ ৬০ মিগ্রা. থেকে ২৫০ মিগ্রা. হতে পারে।
- সাধারণত চার থেকে ছয় ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি ব্যবহার করা যায় তবে মনে রাখবেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে ০৪ টির বেশি সাপোজিটরি ব্যবহার করা উচিত নয়।
- জ্বরের পাশাপাশি যদি শিশুর সর্দি বা কাশি থাকে তাহলে সাপোজিটরি ব্যবহার করার পর আলাদাভাবে অন্য কোন ঔষধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি দেয়া যায়
আপনার শিশুর বয়স ওজন এবং জ্বর এর উপর ভিত্তি করে কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি
দেওয়া যায় তা নির্ধারিত হবে। শিশুর বয়স কম থাকলে কিংবা জ্বর কম থাকলে সাধারণত
৬ ঘন্টা বা ১২ ঘণ্টা পর পর সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ঘুমানোর দোয়া বাংলায় - পেশাব পায়খানার দুআ - মানসিক চাপ থেকে মুক্তির দোয়া - ১০০+ ইসলামিক শিক্ষামূলক উক্তি
তবে যদি জ্বর খুবই বেশি থাকে এবং তা যদি ১০৪ ডিগ্রী এর কাছাকাছি হয়ে যায় তাহলে
সাধারণত চার ঘন্টা বা ছয় ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চার
ঘন্টা চার ঘন্টা বা ছয় ঘন্টা যাই হোক না কেন মনে রাখতে হবে একদিনে অর্থাৎ ২৪
ঘন্টায় সর্বোচ্চ চারটি সাপোজিটরি ব্যবহার করা যায়। এর বেশি করলে শারীরিক ক্ষতি
হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি দেওয়া যায় এবং কত পরিমানে দিতে হবে তা অবশ্যই
একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন আপনার
সামান্য একটি অবহেলায় আপনার শিশুর জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।
সাপোজিটরি দেওয়ার কতক্ষণ পর জ্বর কমে
সাধারণত মুখের মাধ্যমে ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ ব্যবহার করলে জ্বর ছাড়তে ৪৫ মিনিট
থেকে ১ ঘন্টা সময় নেয়। সাপোজিটরের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রায় একই রকম সময়
লাগে তবে এক্ষেত্রে কিছুটা সময় কম লাগে।
আরো পড়ুন: উকিল অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার হওয়ার পদ্ধতি - যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম - হ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
সাপোজিটরিতে খুবই নরম প্রোটিনের প্রলেপ ব্যবহার করা হয় যা খুব সহজেই গলে যায়।
পায়ু পথের আশেপাশে রক্তনালির সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাপোজিটরি খুব দ্রুতই কাজ শুরু
করতে পারে। এক্ষেত্রে ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ এর চাইতে সময় কিছুটা কম লাগে।
শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি
বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের সাপোজিটরি রয়েছে যেমন:
- এইচ (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড.
- ফাস্ট (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- একমি লিমিটেড.
- মমডল (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল
- নাপা (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড.
- রেনোভা (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড.
- এক্সেল (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- এসিআই লিমিটেড.
- এক্সপা (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) --- এরিস্ট্রো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড.
আরো পড়ুন: মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় - অনলাইন বাস টিকেট বুকিং বাংলাদেশ - খুলনা থেকে রাজশাহী-ট্রেনের সময়সূচী এবং ভাড়া
এ সকল সাপোজিটরের মধ্যে সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয় এইচ (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা,
৫০০ মিগ্রা) এবং নাপা (১২৫ মিগ্রা, ২৫০ মিগ্রা, ৫০০ মিগ্রা) বাংলাদেশের প্রায়
সকল কোম্পানির সাপোজিটরি গুণগত মানসম্পন্ন এবং কার্যকরী। তাই ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী আপনি আপনার শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি তা সংগ্রহ করতে
পারেন।
শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি : লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সামনে সাপোজিটরি কি?, শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের
নিয়ম , কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি দেয়া যায় , সাপোজিটরি দেওয়ার কতক্ষণ পর জ্বর
কমে , শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি কোনটি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করলাম। আশা করব আমাদের আজকের আলোচনাটি থেকে আপনি শিশুদের সাপোজিটরি
ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করুন এবং
গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে
ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।