জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা । পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত
প্রিয় পাঠক জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। ইসলাম ধর্ম মতে পবিত্র
জুম্মা মোবারকের ফজিলত অপরিসীম। আজকে আমরা জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা এবং
পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত নিয়ে আলোচনা করব।
জুম্মার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কোরআনে 'জুমা' নামে একটি
স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে।জুম্মার দিন বা শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন।
এই দিনের মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক বেশি। চলুন তাহলে আজকে আমরা জুম্মা মোবারক
স্ট্যাটাস বাংলা এবং পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত নিয়ে বিস্তারিত জেনে আসি।
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা - পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত
জুম্মা মোবারককে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। জুম্মা মোবারক দিনের ফজিলত
সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে।রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুম্মা মোবারক দিন সপ্তাহের
মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার
দিনগুলোর মধ্যে জুম্মা মোবারক সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়াছে।
এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জুম্মা মোবারকে তাকে জান্নাত থেকে
বের করা হয়েছে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
জুম্মা মোবারক দিনে ৪টি কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ-
গোসল করা, উত্তম পোশাক গায়ে দেওয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।
আল্লাহর রাসুল (সা.)
বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম্মা মোবারককে গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি
ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুম্মা নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের
গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম
খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল
পূর্ববর্তী জুম্মা মোবারক দিন থেকে পরের জুম্মা মোবারক পর্যন্ত সমস্ত সগিরা
গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা - পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত
জুম্মা মোবারক আগেভাগে মসজিদে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ আমল। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ!
জুম্মা মোবারক দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত
ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো। ’ (সুরা
জুমা, আয়াত : ০৯)
আরো পড়ুন: উকিল/অ্যাডভোকেট/ব্যারিস্টার হতে কি করবেন ? - হ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম - বাংলাদেশের ৬৬ তম জেলার নাম কি ?
রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুম্মা মোবারকে মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন। এবং
ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির
মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভী
কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন বের
হন, তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনতে থাকেন।
(বুখারি, হাদিস : ৯২৯)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
সুরা কাহফ তিলওয়াত করা জুম্মা মোবারক দিনের বিশেষ একটি আমল। আবু সাঈদ খুদরি (রা.)
থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম্মা মোবারকে সুরা কাহফ পাঠ
করবে, তার জন্য দুই জুম্মা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। ’ (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল
লাইল, হাদিস : ৯৫২)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
মুহাম্মদ (সা.) এর উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলতপূর্ণ
আরেক আমল। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘দিনসমূহের মধ্যে জুম্মার দিনই সর্বোত্তম।
এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে
শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে সমস্ত সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এই
দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা, তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ
করা হয়ে থাকে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
জুম্মা মোবারক দিনের বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে দোয়া করা। জাবের ইবনে
আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত প্রিয় নবী (সা.) বলেন, জুম্মা মোবারক দিনের একটি
বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা
কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
নবিজি (সা.) বলেছেন, জুম্মা মোবারককে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পড়ো, কেননা তোমাদের
দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। আর দরুদ পড়লে আল্লাহ বান্দার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল
করেন। এ দিন বিকেল বেলা দরুদ পড়লে ৮০ বছরের গুনাহও ক্ষমা হয়।
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
জুম্মা মোবারক দিনের রয়েছে আমল ও বিশেষ ফজিলত। জুম্মা মোবারক দিনের ফজিলতের
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো এ দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যখন দোয়া করলে তা
কবুলের আশা করা যায়। হজরত আনাস ইবনু মালিক রা. বর্ণনা করেন, নবি (সা.) বলেছেন,
‘জুম্মা মোবারক দিনের যে মুহুর্তে দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা যায় তা আসরের পর
থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে তালাশ করো।’ (তিরমিজি, মুসলিম, মিশকাত, তালিকুর রাগিব)
আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুম্মা মোবারক দিনে একটা
এমন সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা
করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাঁকে তা দান করবেন। (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)।জুম্মা মোবারক
দিনের দোয়া কবুল হওয়ার সময় সম্পর্কে ৪৫টা মতামত পাওয়া যায়। তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ
মত হলো, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোবাইল নাম্বার - রাজশাহী টু খুলনা ট্রেনের সময়সূচী - বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর
হজরত আনাস রা. বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জুম্মার দিনে বেশি
বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ জিবরিল আলাইহিস সালাম এইমাত্র আল্লাহ তাআলার বাণী নিয়ে
হাজির হলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ
পাঠ করে আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার
ইস্তেগফার করে।’ (তারগিব)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
হজরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, নবি করিম সা. ইরশাদ করেন, ‘আমার ওপর দরুদ পাঠ
করা পুলসিরাত পার হওয়ার সময় আলো হবে। যে ব্যক্তি জুমার দিন ৮০ বার দরুদ পড়ে তার
৮০ বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।
অন্য রেওয়াতে নবি করিম সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর
নিজ স্থান থেকে ওঠার আগে ৮০ বার এই দরুদ শরিফ পাঠ করে-আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা
মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা।তার ৮০
বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। (আফজালুস
সালাওয়াত)
হজরত আলি রা. বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি নবি করিম সা. ওপর জুম্মার দিন ১০০ বার
দরুদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি
দেখে লোকেরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ (কানজুল উম্মাল)
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা - পবিত্র জুম্মা মোবারকের ফজিলত : লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা এবং পবিত্র জুম্মা মোবারকের
ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আশা করি আমাদের আলোচনাটি আপনার ভাল লেগেছে।আল্লাহ
তাআলা আমাদের সুন্দর ও স্বার্থকভাবে জুমার দিন কাটানোর তাওফিক দান করুন। পবিত্র
এই দিনের কল্যাণ, সওয়াব ও ফজিলত দিয়ে আমাদের দান করুন।
এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করুন এবং
গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে
ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।