বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার সম্পর্কে জানুন
বাংলাদেশের আধা সমরিক এবং বেসমারিক বাহিনী বলতে বুঝায় বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি,
র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীকে । আজকে আমরা বাংলাদেশ
পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার সম্পর্কে বিস্তারিত
জানবো
বাংলাদেশেকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করার দ্বায়িত্ব
বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর। দেশের অভ্যন্তরীণ সকল বিষয়ে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা,প্রাকৃতিক দূর্যোগ, জঙ্গি
নির্মূল ,অগ্নি নির্বাপন সহ সকল প্রয়োজনীয় মূহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনী।
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ ভূমিকা
দেশের সীমান্ত রক্ষার দ্বায়িত্ব বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির। অভ্যন্তরীণ
শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব বাংলাদেশ পুলিশের। পুলিশকে প্রয়োজনীয় মূহুর্তে সকল প্রকার
সহযোগিতা করার দ্বায়িত্ব র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের। নৌপথ
নিরাপত্তার দায়িত্ব বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এর। অগ্নি নির্বাাপন এবং প্রাকৃতিক
দূযোর্গকালে উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স
এবং দেশের যে কোন বিপদে সকল বাহিনীকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার দ্বায়িত্ব পালন করে
বাংলাদেশ আনসার বাহিনী।
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ বাংলাদেশ পুলিশ
”শান্তি শৃঙ্খলা নিরাপত্তা প্রগতি” এই মূলমন্ত্র নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের অন্যতম
বৃহৎ বাহিনী হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। প্রায় ২,১৫,০০০ সদস্য নিয়ে গঠিত এই বাহিনী।
ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর। এই বাহিনীর ২০ টি
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৬৫১ টি কর্মস্থল রয়েছে যেখান থেকে তাদের কার্যক্রম
পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান
বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান প্রধান আইজিপি
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন
তিনি ২০২২ সালের ৩০ শে সেপ্টেম্বর থেকে পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন ১৯৮৯
সালে বাংলাদেশ পুলিশের এএফসি হিসেবে যোগদান করেন তিনি তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ২৯
তম পুলিশ প্রধান।
বাংলাদেশ পুলিশ এর প্রশাসনিক কাঠামো
বাংলাদেশ পুলিশের ১৭ টি প্রশাসনিক ইউনিট রয়েছে এগুলো হলো
- পুলিশ সদর দপ্তর
- রেঞ্জ পুলিশ
- মেট্রপলিটন পুলিশ
- এসবি
- সিআইডি
- এপিবিএন
- জিআরপি
- হাইওয়ে পৃলিশ
- ইন্ডাস্ট্রির পুলিশ
- পিআইও
- পিবিআই
- টুরিস্ট পুলিশ
- নো পুলিশ
- এন্টি টেরোরিজম ইউনিট
- ট্রেনিং ইনস্টিটিউট
- ইমিগ্রেশন পুলিশ
- সোয়াট
বাংলাদেশ পুলিশের প্রশাসনিক কাঠামো
বাংলাদেশের আটটি বিভাগের নামে পুলিশের আটটি রেঞ্জ রয়েছে এ সকল রেঞ্জের অধীনে
প্রতিটি জেলার নামে আলাদা জেলা পুলিশ রয়েছে প্রতিটি জেলাকে কয়েকটি সার্কেলে ভাগ
করা হয়েছে এবং একটি সার্কেলকে কয়েকটি থানায় বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি থানার
আন্ডারে একাধিক তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ ফাঁড়ি এবং পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে।
সহজ ভাবে বললে. কয়েকটি তদন্ত কেন্দ্র হাড়ি এবং ক্যাম্প মিলে একটি থানা গঠিত হয়
কয়েকটি থানা মিলে একটি সার্কেল এবং কয়েকটি সার্কেল মিলে একটি জেলা গঠিত হয়
কয়েকটি জেলা মিলে একটি রেঞ্জ গঠিত হয় সমগ্র বাংলাদেশকে কিসের আটটি রেঞ্জের
বিভক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ এর পদক্রম
নিম্নে বাংলাদেশ পুলিশের পদক্রম দেওয়া হলো এটি সর্বনিম্ন স্তর থেকে সর্বোচ্চ
স্তর পর্যন্ত
- কনস্টেবল
- নায়েক
- এ এস আই
- এসআই
- ইন্সপেক্টর
- এএসপি
- সিনিয়র এএসপি
- অ্যাডিশনাল এসপি
- এসপি
- অ্যাডিশনাল ডিআইজি
- ডিআইজি
- অ্যাডিশনাল আইজিপি
- আইজিপি
বাংলাদেশ পুলিশ এর অস্ত্র-শস্ত্র এবং যানবাহন
বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণ অস্ত্র হিসেবে ৭.৬২ রাইফেল,
নাইন এমএম পিস্তল
একে-৪৭
টিআরশেল
সাউন্ড গ্রেনেড
পিপার স্প্রে
১২ বোরের শর্টগান ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে ।
যানবাহন হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ মোটরসাইকেল এবং পিকআপ ভ্যান বেশি ব্যবহার করে থাকে
এছাড়াও বাস, ট্রাক, থ্রি টন গাড়ি ইত্যাদি তাদের বহরে রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ
জলকামান, এপিসি, হেলিকপ্টার ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে। দ্রুত যাতায়াতের জন্য
বাংলাদেশ পুলিশের বহরে বিশাল সংখ্যক আধুনিক মোটরসাইকেল রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ এবং মুক্তিযুদ্ধ
১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশে রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৭১
সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে রাজারবাগ
পুলিশ লাইনের বীর সদস্যরা প্রথম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ
গড়ে তোলেন। ১৯৭১ সালে সারা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন
বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা।মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ১২৬২ জন সদস্য শহীদ হন।
বাংলাদেশ পুলিশ এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা। ১৯৮৯
সালে নামিবিয়া মিশন দিয়ে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ মোট ১৮ টি
শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করেছে। এ সকল মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ১০০০০ এর উপরে
সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন যা বাংলাদেশের সম্মান কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের সবচাইতে দীর্ঘ কার্যক্রম পরিচালিত
হচ্ছে পূর্ব তিমুরে ১৯৯৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ
পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ বিজিবি
”সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী” মূল মন্ত্রের দীক্ষিত বাংলাদেশের সবচাইতে প্রাচীন
বাহিনী হচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি। ১৭৯৫ সাল থেকে বাহিনীটি
বাংলাদেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদর দপ্তর পিলখানা
অবস্থিতি। এই বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০,০০০।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি মহাপরিচালক
বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছেন মেজর
জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন দুই তারকা বিশিষ্ট
জেনারেল। নাজমুল হাসান ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন, তাকে
২০২৩ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে বিজিবি মহা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি সেক্টর এবং ব্যাটালিয়ান
পাঁচটি সেক্টর এবং ১৫ টি ব্যাটালিয়নের বিভক্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি
পাঁচটি সেক্টর হচ্ছেঃ
- রাজশাহী
- ঠাকুরগাঁও
- দিনাজপুর
- রংপুর
- এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো
১৫ টি ব্যাটালিয়ান হচ্ছে
- রাজশাহী
- রহনপুর
- পত্নীতলা
- নওগাঁ
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- রংপুর
- কুড়িগ্রাম
- লালমনিরহাট
- তিস্তা
- নীলফামারী
- ঠাকুরগাঁও
- পঞ্চগড়
- জয়পুরহাট
- দিনাজপুর
- ফুলবাড়ি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি পদক্রম
- সিপাহী
- ল্যান্স নায়েক
- নায়েক
- হাবিলদার
- নায়ক সুবেদার
- সুবেদার
- সুবেদার মেজর
- অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর
- ডেপুটি ডাইরেক্টর
- অ্যাডিশনাল ডাইরেক্টর
- ডাইরেক্টর
- ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল
- অ্যাডিশনাল ডাইরেক্টর জেনারেল
- ডাইরেক্টর জেনারেল
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি অস্ত্রশস্ত্র এবং যানবাহন
বিজিবি সাধারণ অস্ত্র হিসেবে বিডি-08, টাইপ-56, টাইপ-85 , বিডি-14,বিডি-15,
টাইপ-67, এমজি-3, টাইপ-54, আর্জেস -58 গ্রেনেড, বিওএফ মর্টার, টাইপ-69 রকেট
লাঞ্চার ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে।
যানবাহন হিসেবে আছে সাজোয়াজান কার্জ স্পার্টান, পেট্রোল ভ্যাসেল প্রায় ৬০০ টি,
কামাজ-4326 সহ প্রায় ২০০০ সৈন্য ও অস্ত্র পরিবহনে সক্ষম ভারী যানবাহন। দ্রুত
যাতায়তের জন্য পোলারিস এটিভি আছে -১২০ টি এবং মোটরসাইকেল আছে ১২০০ টি। সম্প্রতি
রাশিয়ার তৈরী ০২ টি এমআই হেলিকাপ্টার যুক্ত হয়েছে বিজিবি বহরে।
মুক্তিযুদ্ধ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির রয়েছে
গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। বীরত্বের জন্য এই বাহিনীর ০২ জন বীরশ্রেষ্ঠ ,০৮ জন বীর
উত্তম,৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৮ জন কে বীরপ্রতিক উপাধী প্রদান করা হয়। এই বাহিনীর
মোট ৮১৭ জন সৈনিক শহীদ হন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবিঃ ভারত বাংলাদেশ যুদ্ধ ২০০১
২০০১সালের ১৫ এপ্রিল ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে
অনুপ্রবেশ ঘটালে বিজিবি (তৎকালীন বিডিআর) জওয়ানদের সাথে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
সিলেটের পাদুয়া এবং কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সংঘটিত এই যুদ্ধ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চলতে
থাকে।
আরো পড়ুনঃকতটা শক্তিশালী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
যুদ্ধে বিজিবির (তৎকালীন বিডিআর) অসামান্য সাহসিকতায় এবং রণকৌশলে মাত্র ৭০ জন
(যার মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক) ভারতীয় প্রায় ১২০০ জন সৈন্যকে সৌচনীয়ভাবে পরাজিত
করেন। যুদ্ধে ভারতের ১৬ জন সৈন্য নিহত হয় এবং বাংলাদেশের ০৩ জন বীর সেনানী শহীদ
হন। পরবর্তীতে উভয় দেশের সরকারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ র্যাব
”বাংলাদেশ আমার অহংকার” মূল মন্ত্রে দিক্ষিত বাংলাদেশের অন্যতম এলিট বাহিনী
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব। ২০০৪ সালে গঠিত এই বাহিনীর সদর দপ্তর
কুর্মিটোলা, ঢাকা। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর বর্তমান সদস্য
সংখ্যা প্রায় ১২০০০।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব প্রধান
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর বর্তমান প্রধান
ডিজি এম খুরশীদ হোসেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের এক জন অতিরিক্ত আইজিপি। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে তিনি
র্যাব প্রধানের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন।১৯৯১ সালে তিনি এএসপি হিসেবে বাংলাদেশ
পুলিশে যোগদান করেন।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর ব্যাটালিয়ন এবং বিভাগ সমূহ
সমগ্র বাংলাদেশে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর মোট ১৫ টি ব্যাটালিয়ন
রয়েছে। এগুলো হলঃ
- র্যাব-০১ (টংগী ,গাজীপুর)
- র্যাব-০২ (তেজগাওঁ, শেরে-বাংলা নগর, আগারগাওঁ)
- র্যাব-০৩ (মতিঝিল, পল্টন, শাহজাহানপুর)
- র্যাব-০৪ (পল্লবী ও রূপনগর)
- র্যাব-০৫ (রাজশাহী বিভাগ)
- র্যাব-০৬ (খুলনা বিভাগ)
- র্যাব-০৭ (পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম)
- র্যাব-০৮ (পটুয়াখালী,বরিশাল,পিরোজপুর,ঝালকাঠি ও ভোলা)
- র্যাব-০৯ (সিলেট বিভাগ)
- র্যাব-১০ ( ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, চকবাজার, বংশাল)
- র্যাব-১১ (আদমজীনগর, নবাবগঞ্জ,দোহার, মুন্সিগঞ্জ,লৌহজং, সিরাজদিখান)
- র্যাব-১২ (সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া)
- র্যাব-১৩ ( কুড়িগ্রাম ও রংপুর)
- র্যাব-১৪ (ময়মনসিংহ)
- র্যাব-১৫ (কক্সবাজার)
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর ০৮ টি বিভাগ রয়েছে। এগুলো হল:
- এডমিন এন্ড ফাইন্যান্স উইং
- অপারেশনস উইং
- লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং
- কমিউনিকেশন এবং এম আই এস উইং
- এয়ার উইং
- আর এন্ড ডি সেল
- ইন্টেলিজেন্স উইং
- ইনভেস্টিগেশন এন্ড ফরেনসিক উইং
- ট্রেনিং এন্ড ওরিয়েন্টেশন উইং
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর পদক্রম
র্যাব মূলত বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনী পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান
বাহিনী, আনসার, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার সদস্যদের নিয়ে গঠিত।তাই এর কোন আলাদা
নিয়োগ প্রক্রিয়া নেই। বিভিন্ন বাহিনী থেকে আগত হলেও এই বাহিনীর নির্দিষ্ট পদক্রম
রয়েছে। এগুলো হলঃ
- কন্সটেবল
- নায়েক
- এসিসট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর
- সার্জেন্ট / সাব ইন্সপেক্টর
- ডেপুটি এসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর
- এসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর
- সিনিয়র এসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর
- কোম্পানি কমান্ডার
- ডাইরেক্টর
- এডিশনাল ডাইরেক্টর জেনারেল
- ডাইরক্টের জেনারেল
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব এর সাম্প্রতিক কার্যক্রম
র্যাব প্রতিষ্ঠা খুব বেশিদিন না হলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গি দমনে র্যাবের উল্লেখযোগ্য ঘটনা
গুলোর মধ্যে রয়েছে মুফতি হান্নান গ্রেফতার. পিচ্চি হান্নান, মোল্লা শামীম,
শাহাবুদ্দিন গ্রেপ্তার, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ে অভিযান
চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার, হলি আর্টিজনে সাহসী ভূমিকা পালন. ইত্যাদি।
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ কোস্টগার্ড
১৯৯৫ সালে ”সমুদ্রের অভিভাবক” এই নীতিবাক্যকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ
কোস্টগার্ড বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং উপকরণ অঞ্চলে নিরাপত্তা শৃঙ্খলা বিধান
এই বাহিনীর মূল দায়িত্ব এই বাহিনীর ৫৭ টি জাহাজ এবং প্রায় ৪০০০ সদস্য রয়েছেন।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডঃ মহাপরিচালক
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের বর্তমান মহাপরিচালক
রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী
তিনি ২০২১ সালে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন
প্রাপ্ত হন। তিনি বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একজন দুই তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। তিনি
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ১৫ তম মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পদক্রম
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পদক্রম নিম্নে দেওয়া হলঃ
- অর্ডিনারি সীম্যান
- এবল সীম্যান
- লিডং সীম্যান
- পেটি অফিসার
- চিফ পেটি অফিসার
- সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার
- মাস্টার চিফ পেটি অফিসার
- সাব লেফটেন্যান্ট
- লেফটেন্যান্ট
- লেফটেন্যান্ট কমান্ডার
- কমান্ডার
- ক্যাপ্টেন
- কমোডর (★)
- রিয়ার এ্যাডমিরাল (★★)
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডঃ অন্যান্য তথ্য
কোস্টগার্ডে অধিকাংশ অফিসারই বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে কমিশন প্রাপ্ত ।
সাংগঠনিক কাজের সুবিধার জন্য কোস্টগার্ড কে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে নর্থ
জোন-ঢাকা, সাউথ জোন-ভোলা, ইস্ট জোন-চট্টগ্রাম, ওয়েস্ট জোন-বাগেরহাট।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সম্পর্কে আরো জানতে এই লিংকে ক্লিক করুনঃ
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ ফায়ার সার্ভিস
”গতি সেবা ত্যাগ এই” মূল মন্ত্রে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ফায়ার
সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদর দপ্তর কাজী
আলাউদ্দিন সড়ক, ঢাকা। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার।
আরো পড়ুনঃ বিখ্যাত ব্যাক্তিদের ১০টি মজার উক্তি
সারা বাংলাদেশে ৪৯৫ টি ফায়ার স্টেশন রয়েছে। দেশের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ
দুর্ঘটনা অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদিতে সরাসরি সম্মুখভাগে থেকে দেশ এবং দেশের মানুষের
সেবা করায় ফায়ার সার্ভিসের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সঃ মহাপরিচালক
ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর বর্তমান মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
মোঃ মাইন উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন এক তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। তিনি
২০২২ সাল থেকে এই বাহিনীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন ১৯৯০ সালে তিনি
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন। তিনি ফায়ার সার্ভিস এবং
সিভিল ডিফেন্স এর ১৫ তম মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সঃ স্টেশন সমূহ
৪ হাজার ৭১২টি যানবাহন, অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জাম এবং পাম্প নিয়ে ফায়ার
সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর প্রশাসনিক আটটি বিভাগে মোট ৪৯৫ টি
স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে-
- ঢাকা বিভাগ-১১৪
- চট্টগ্রাম বিভাগ-৯৭
- রাজশাহী বিভাগ-৬৬
- খুলনা বিভাগ৫৭
- বরিশাল বিভাগ-৪১
- সিলেট বিভাগ-৯
- রংপুর বিভাগ-৫৯
- ময়মনসিংহ বিভাগ-৩২ ।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর পদক্রম
- ডুবুরী
- নেতা
- অফিসার
- স্টেশন অফিসার
- গুদাম পরিদর্শক
- অফিসার ইনচার্জ
- সিনিয়র স্টাফ অফিসার
- অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর
- ডেপুটি ডাইরেক্টর
- ডাইরেক্টর
- ডাইরেক্টর জেনারেল
বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বাহিনীঃ আনসার
”শান্তি-শৃঙ্খলা উন্নয়ন নিরাপত্তায় সর্বত্র আমরা” এই নীতিবাক্যে ১৯৪৮ সালের
প্রতিষ্ঠিত প্রায় ৬০ লাখ জনবলের বিশাল বাহিনী বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম
প্রতিরক্ষা বাহিনী। বর্তমান বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাহিনী এটি । এই বাহিনীর সদর দপ্তর
রাজধানী ঢাকার আতিশ দীপঙ্কর রোডে অবস্থিত।
বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীঃ মহাপরিচালক
বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কে আমিনুল হক। তিনি
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন দুই তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। তিনি ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আনসার বাহিনী রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা। এই
বাহিনীর প্রায় ৪০ হাজার সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ৬৭০
জন সদস্য মুক্তিযুদ্ধের শাহাদাত বরণ করেন। ০১ বীর বিক্রম এবং ০২বীর প্রতীক
উপাধিতে ভূষিত হন।
বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীঃ অন্যান্য তথ্য
পুরো সংগঠনকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করে মূলত আনসারের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
এগুলো হলঃ
- সাধারণ আনসার
- ব্যাটালিয়ন আনসার এবং
- গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
সারাদেশে নয়টি বিভাগের নয়টি রেঞ্জের বিভক্ত করে আনসার বাহিনীর কার্যক্রম
পরিচালিত হয়। একেবারে পাড়া, মহল্লা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড ,ইউনিয়ন, থানা,
উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে আনসার বাহিনীর কার্যক্রম
রয়েছে।
লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশ,
বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার
চেষ্টা করলাম আশা করব আমাদের এই তথ্যগুলো আপনাদের জ্ঞানের ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ
করবে। এ বিষয়ে আপনাদের কোন মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে
জানাতে পারেন। এরকম তথ্যবহুল এবং প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়মিত পেতে আমাদের
ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ।।