কিডনি ভালো রাখার উপায় - কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কিডনি মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অংশ। আজকে আমরা কিডনি ভালো রাখার উপায় এবং
কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব। পাশাপাশি জানবো কিডনি ভালো আছে
কিনা বোঝার উপায় এবং বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে ।
কিডনি ভালো রাখার উপায় প্রতিটি মানুষের জন্যই খুবই প্রয়োজন। কিডনি ভালো রাখার
উপায় সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই কিডনি সম্পর্কে আমাদের খুটি নাটি জানতে হবে।
আজকের পোষ্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ন তাই আশা করব অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
কিডনি ভালো রাখার উপায়ঃ কিডনি কি? কিডনির কাজ কি?
কিডনির বাংলা
বৃক্ক।
মানুষের শরীরের মেরুদন্ডর দুইপাশে দুইটি কিডনি অবস্থিত। প্রতিটি কিডনি ৪ থেকে ৫
ইঞ্চি লম্বা হয়। কিডনি মানবদেহের রক্ত থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য, অতিরিক্ত পানি শোষন
করে প্রসাব আকারে বের করে দেয়। হরমোন উৎপাদন করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, রক্ত
পরিশুদ্ধ করে এবং ক্যালসিয়াম শোষেণে সহায়তা করে। মানুষের রক্ত প্রতিদিন ৪০ বার
কিডনির মাধ্যমে পরিশুদ্ধ হয়।
কিডনি ভালো রাখার উপায়ঃ কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় হচ্ছে ২টি । একটি রক্ত পরীক্ষা অন্যটি প্রসাব
পরীক্ষা।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়: রক্ত পরীক্ষা বা জিএফআর(GFR)
গ্লোমেরুলার ফিলটেশন রেট বা জিএফআর টেস্ট এর মাধ্যমে জানা যাবে আপনার কিডনি ভালো
আছে কি না। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে জিএফআর ৯০ বা তার বেশি। জিএফআর৬০ পর্যন্ত
স্বাভাবিক ধরা হয়। GFR ৬০ এর নিচে চলে গেলে কিডনি রোগের সম্ভবনা থাকে।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়: প্রসাব পরীক্ষা বা এসিআর(ACR)
এসিআর পরীক্ষায় প্রসাব এর অ্যলবুমিন এবং ক্রিয়েটিন এর অনুপাত (ACR) পরিমাণ করা
হয়। প্রসাবে যদি প্রোটিন পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে কিডনিতে সমস্যা রয়েছে। তখন নন
ফাংশন রিকুয়্যারমেন্ট (NFR) টেস্ট করতে হবে। পর পর তিন মাস NFR পজেটিভ আসলে বুঝতে
হবে আপনার কিডনিতে সমস্যা আছে।
কিডনি ভালো রাখার উপায়ঃ কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগ একটি নিরব ঘাতক । প্রাথমিক পর্যায়ে সহজে এই রোগের লক্ষনগুলো প্রকাশ পায়
না। তবে রোগের মাত্রা বেড়ে গেলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যেমনঃ
- ঘন ঘন প্রসাবের চাপ আসা
- প্রসাবে জ্বালাপোড়া
- প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়া
- শরীর ব্যাথা বিশেষ করে পিঠের নিচের অংশে
- শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি
- ক্লান্তিভাব
- শীত শীত অনুভব
- শ্বাসকষ্ট হওয়া
- বমিবমি ভাব
- ওজন কমে যাওয়া
- হাত,পা,মুখ পানি জমে ফুলে যাওয়া
👉👉মনে রাখতে হবে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে তারা সহজেই কিডনি
রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাদের ক্ষেত্রে সবমসময় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে।
কিডনি ভালো রাখার উপায়- কিডনি রোগের লক্ষণঃ কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়
কিডনি রোগ প্রতিরোধে নিচের বিষয়গুলো লক্ষ রাখতে হবেঃ
- অতিরিক্ত লবন ত্যাগ করতে হবে।
- নিয়মিত শরীর চর্চাকরতে হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে।
- নিয়মিত শাক সবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
- ইচ্ছে মতো ওষুধ খাওয়া যাবেনা যেকোনো ওষুধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে
- ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করতে হবে
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
- কিডনি রোগীর খাবার তালিকা
- কিডনি ভাল রাখার ব্যায়াম
- অতিরিক্ত কোলেস্টরেল যুক্ত খাবার পরিত্যাগ করতে হবে
কিডনি ভালো রাখার উপায়- কিডনি রোগের লক্ষণঃ কিডনি রোগের চিকিৎসা এবং বাংলাদেশ
বাংলাদেশ কিডনি রোগের চিকিৎসা এবং সচেতনতায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কিডনি রোগীদের
জন্য বাংলাদেশের সবচাইতে কম খরচে চিকিৎসা পরিচালিত হয় কিডনি ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশে। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম ডায়ালাইসিস সেন্টার। রাজধানী ঢাকার মিরপুর
২ এ অবস্থিত
কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
কিডনি রোগীদের জন্য সরকারিভাবে পরিচালিত হাসপাতালটির নাম হচ্ছে
জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট। রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত। এছাড়াও রাজধানী ঢাকা শহর
সারাদেশে অনেকগুলো ভালো এবং উন্নতমানের কিডনি চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আজকে আমরা কিডনি
রোগের লক্ষণ কিডনি কি? কিডনি কিভাবে কাজ করে? কিডনি ভালো রাখার উপায় ইত্যাদি
সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
আশা করব আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন
বা মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য
পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।